মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় প্রায় এক যুগ আগে হরতালের সমর্থনে করা মিছিলে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম ও দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১০৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৫০০-৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের মো. মজনু মিয়া (৬০) বাদী হয়ে সিঙ্গাইর থানায় মামলাটি করেন। শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মাজেদ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সিঙ্গাইর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সায়েদুল ইসলাম, সিঙ্গাইর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার ও মীর মো. শাহজাহান প্রমুখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হরতালের সমর্থনে মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর সড়কের গোবিন্দল নতুন বাজার এলাকায় মিছিল বের করেন ইসলামী দলগুলোর নেতাকর্মীরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বাদীর ছেলে নাজিম উদ্দিন মোল্লাসহ চারজন নিহত হন। নিহত অপর তিনজন হলেন: গোবিন্দল গ্রামের মওলানা নাসির উদ্দিন, আলমগীর হোসেন ও শাহ আলম।
একই ঘটনায় গত ৯ অক্টোবর সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম, ৩৭ পুলিশ সদস্যসহ ৯০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ৬০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন গোবিন্দল গ্রামের মো. সহিদুল ইসলাম। ওই মামলার আসামির তালিকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীসহ আছেন তৎকালীন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কামরুল ইসলাম, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তৎকালীন পরিদর্শক মো. মহিবুল আলম, মদন মোহন বণিক ও মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, সিঙ্গাইর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আদিল মাহমুদ, মোজাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, এর আগের মামলায় কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দুটি মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।