মাটির নিচে দিয়ে বৈদ্যুতিক তার নিতে সড়কের একাংশ কাটা হয়েছে। বৈদ্যুতিক তারের কয়েল ও ভারী যন্ত্রাংশ এবং মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে কাটা অংশের চারপাশে দেওয়া হয়েছে বেষ্টনী। এ কারণে সড়ক হয়েছে সংকীর্ণ। বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল করছে ধীর গতিতে। মাঝে মধ্যেই যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ফলে দুর্ভোগে পড়ছেন সড়কে যাতায়াতকারীরা।
এটি নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের দিকে যাওয়া সলিমুল্লাহ সড়কের অবস্থা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ‘জিটুজি’ প্রকল্পের আওতায় চানমারির সাব স্টেশন থেকে ভূগর্ভস্থ তার এনে খানপুরের অপর সব স্টেশনে যুক্ত করা হবে। সেপ্টেম্বর থেকে চানমারী থেকে লিঙ্ক রোডের পাশে মাটি কেটে ভূগর্ভস্থ তার সংযোগের ব্যবস্থার কাজ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন অংশে বৈদ্যুতিক তার যুক্ত করে বালু ও মাটি দিয়ে গর্ত বা কাটা অংশ ভরাট করা হবে।
রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাষাড়া বাগে জান্নাত মসজিদ পেরিয়ে মিশনপাড়া হয়ে সলিমুল্লাহ সড়কের এক পাশ দিয়ে ভারী যন্ত্রাংশের মাধ্যমে খনন কাজ করা চলছে। ১৩২/৩৩/১১ কিলো ভোল্ট ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার টানার জন্য ডিপিডিসির কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। সকাল থেকে দুপুরের আগ পর্যন্ত এবং গভীর রাতেও কাজ হচ্ছে বলে জানান কর্মীরা। সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা ও যন্ত্রাংশ রাখার জন্য সড়কের একটি অংশ নিয়ে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। ফলে, সলিমুল্লাহ সড়কটি যাতায়াতের জন্য অনেকটা সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন ধরণের যান ধীর গতিতে চলাচল করছে।
সাব্বির নামে এক দোকানদার বলেন, ‘রাস্তার প্রায় ৪০ ভাগ চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। এই রাস্তায় বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রচুর যানবাহনের চাপ থাকে। বাস ও ট্রাকের মতো বড় গাড়ি কয়েকটি একসঙ্গে এখান দিয়ে গেলে আটকে যায় প্রায়ই।’
পথচারী শিউলি বেগম বলেন, ‘মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেওয়ার কাজ চলছে। রাস্তার অর্ধেক অংশ খোঁড়া থাকার কারণে গাড়ি চলাচল করতে পারে না ঠিকমতো।আমরা এই রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে প্রায় যানজটে বসে থাকি। আমাদের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। কোথাও যেতে গেলে রিকশা ভাড়াও বেশি দিতে হয়। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, রাস্তাটির কাজ যেন দ্রুত শেষ করা হয়।’
ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ দক্ষিণ বিভাগের উপ প্রকৌশলী (এসএই) মাহফুজুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সলিমুল্লাহ সড়কটিতে যাতায়াত স্বাভাবিক হবে।
তিনি আরো জানান, ডিপিডিসির জিটুজি প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক ক্যাবলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যায়ক্রমে ভূগর্ভস্থ ক্যাবল টিউনিং করছি। চানমারিতে ডিপিডিসির সাব স্টেশন করা হচ্ছে। খানপুর এলাকায় আরেকটি সাব স্টেশন রয়েছে। এই দুই স্টেশনকে ভূগর্ভস্থ লাইন দিয়ে সংযোগ করা হচ্ছে।
এই কর্মকর্তা আরও জানান, ইতোমধ্যেই মিশনপাড়া, ডনচেম্বার এলাকায় পুরোদমে কাজ হচ্ছে। কাজ শেষ হলেই আমরা সড়ক ভরাট করবো। এলাকাভেদে ডিপিডিসির পক্ষ থেকে সড়ক ও জনপথ, সিটি করপোরেশনকে সড়ক মেরামতের জন্য ড্যামারেজ বা অর্থ দেওয়া হয়েছে। উনারাই সড়ক মেরামত করবেন। আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে খানপুর পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ তার সংযোগের কাজ সম্পূর্ণ হবে এবং এই সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।