সারা বাংলা

টাকা ফেরত পাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা, শাস্তি হয়নি জড়িতদের 

মানিকগঞ্জে চলতি বছর একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বাড়তি টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ‘ভর্তিতে বাড়তি টাকা আদায়, কর্তৃপক্ষের দাবি বিবিধ ফি’ শিরোনামে ২৯ জুলাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া বাড়তি টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। 

তবে, বোর্ডের নির্দেশনা না পাওয়ায় বাড়তি টাকা আদায়ের সাথে জড়িদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন কলেজটির অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. শহীদুজ্জামান। 

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. রিজাউল হকের কাছে আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লিখিতভাবে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে আবেদন করেন জাহিদুল হক চন্দন। 

আবেদনের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেন। এরপর সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ কর্তৃপক্ষ একাদশ শ্রেণির এক হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেওয়া বাড়তি টাকা ফেরত দেওয়া শুরু করে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা বাড়তি টাকার পরিমাণ পাঁচ লাখ তেইশ হাজার তিনশো আশি টাকা। তবে এ বাড়তি টাকা আদায় করা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।

সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. শরিফুল ইসলাম খানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফিল খানের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। 

ড. মুহাম্মদ মাহফিল খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বায়েজীদ হাসানের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। 

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কেন টাকা নিয়েছিলেন? কেন ফেরত দিচ্ছেন? এমন প্রশ্নে বায়েজীদ হাসান বলেন, ‘কলেজের একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে তিন বিভাগের এক হাজার ৫৮৬ জনের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ভর্তির সময় ৩৩০ টাকা করে নেওয়া হয়েছিল। ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি ইকবাল হোসেন কচি বলেন, ‘অনিয়মাতান্ত্রিকভাবে টাকা আদায় করা হয়েছে বলে এ টাকা ফেরত দিচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে এ টাকা যারা আদায় করেছেন তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। এদের শাস্তি না হলে পুনরায় এ ধরনের কর্মকাণ্ড করতে উৎসাহ জোগাবে। এ বছর গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের কারণে শিক্ষার্থীরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন। বছরের পর বছর একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করেছে কর্তৃপক্ষ। এ টাকা ফেরত না দিয়ে সেগুলো কী করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।’

এ বিষয়ে সরকারি দেবেন্দ্রে কলেজের অধ্যক্ষ মো. শহীদুজ্জামান বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। আগের অধ্যক্ষের সময় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য টাকা নেওয়া হলেও তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।’ 

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ বাড়তি টাকা আদায়কারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘বোর্ড থেকে এ বিষয়ে নথিপত্র পাঠানোর কথা থাকলেও তা এখনো পাইনি। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’