পেঁয়াজ উৎপাদনে দেশের তৃতীয় অবস্থানে রাজবাড়ী জেলা। সারা দেশের ১৪ শতাংশ পেঁয়াজ এই জেলায় উৎপাদন হয়ে থাকে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ ও অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ শুরু করেন চাষিরা। রোপণের ৯০ দিনের মধ্যে ফলন ঘরে তুলতে পারেন তারা। তবে, এবার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে কয়েক দফায় বৃষ্টির কারণে দেরিতে পেঁয়াজ আবাদ শুরু করছেন কৃষকরা।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সরেজমিনে রাজবাড়ী সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে নিচু জমিতে পানি জমে আছে। উঁচু জমির মাটি নরম হয়ে আছে। যা মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণের জন্য উপযোগী নয়। যে কারণে অনেক কৃষক জমিতে বীজ পেঁয়াজ রোপণ পিছিয়ে দিয়েছেন। যেসব জমি চাষাবাদের উপযোগী সেখানে আগাম মুড়িকাটা পেঁয়াজের চারা রোপণ শুরু করেছেন তারা।
সদর উপজেলার উড়াকান্দা গ্রামের চাষি আলতাফ হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে আগাম মুড়িকাটা পেয়াজ আবাদ শুরু করতে একমাস দেরি হয়েছে। এবছর বীজ পেঁয়াজ ও সারসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। দেড়িতে পেঁয়াজ রোপণ করায় কাঙ্খিত ফলন পাবো কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’
মো. রিয়াজ নামে অপর চাষি বলেন, ‘গত বছরের থেকে এবছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে খরচ বেড়েছে। প্রতি বিঘায় বীজ পেঁয়াজ লাগছে ১০ মণ। যার দাম ৮০ হাজার টাকা। সার, চাষ, শ্রমিক খরচ মিলিয়ে পড়ছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার মতো। যেসব কৃষকের জমি লিজ নেওয়া তাদের খরচ হবে প্রায় দেড় লাখ টাকা।’
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের চাষি আবেদ আলী বলেন, ‘খুবই ঝামেলায় আছি পেঁয়াজ রোপণ নিয়ে। কয়েকদিন আগে পেঁয়াজ রোপণের জন্য জমি চাষ করেছি। বৃষ্টির কারণে চারা রোপণ করতে পারিনি। সময় মতো রোপণ করতে পারলে এক মাস পর পেঁয়াজ উঠাতে পারতাম।’
সাত্তার মোল্লা বলেন, ‘আমার মতো অনেক চাষি পেঁয়াজ না লাগিয়ে বসে আছেন। বৃষ্টিতে জমি নরম হয়ে আছে। নরম জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করা যায় না। অনেক চাষি ভাবছেন এবছর পেঁয়াজ রোপণ করবেন না।’
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা গোলাম রাসূল বলেন, ‘এ বছর জেলায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হবে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫০ হাজার মেট্রিক টন। অতিবৃষ্টির কারণে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণ দেরি হচ্ছে। দেরিতে রোপণ হলেও পেঁয়াজ উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়বে না।’