সারা বাংলা

পর্যটকদের জন্য খুলেছে রাঙামাটির দুয়ার

টানা ২৪ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারো পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত পর্যটন নগরী রাঙামাটির দ্বার। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত পর্যটকদের জন্য রাঙামাটি জেলা উন্মুক্ত উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। 

সভায় উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (নেজারত শাখা, ট্রেজারি শাখা) মো. শামীম হোসেনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও সাংবাদিকেরা। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১ নভেম্বর থেকে রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে সব ধরণের বিধি নিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। রাঙামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে বর্তমানে আর কোনো সমস্যা নেই। এখন পর্যটকদের রাঙামাটি ভ্রমণের আহ্বান জানাচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, যেহেতু খাগড়াছড়িতে বিধিনিষেধ আগামী ৫ নভেম্বর থেকে তুলে নেওয়া হবে, তাই আগামী ৫ নভেম্বর থেকে পর্যটকরা সাজেক ভ্রমণ করতে পারবেন।

 

এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়াতে স্বস্তি প্রকাশ করেছে রাঙামাটির পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। রাঙামাটি হাউজ বোট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাপ্পী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, দেশে সরকার পরিবর্তন, রাঙামাটিতে নানান সংঘাতসহ বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন রাঙামাটি পর্যটক শূন্য ছিল। এর মধ্যেই গত ৮ তারিখ থেকে পর্যটকদের রাঙামাটি ভ্রমণে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে আর্থিক ক্ষতির চেয়েও ইমেজের ক্ষতি বেশি হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, এই নিষেধাজ্ঞায় রাঙামাটির পর্যটন খাতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবুও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়ায় আমরা খুশি। আশা করছি রাঙামাটির পর্যটনশিল্প আবারও আগের প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে পাবে। 

রাঙামাটি ট্যুর অপারেটরস অব রাঙামাটির (টোয়ার) সহ-সভাপতি হিল্লোল চাকমা বলেন, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তকে আমরা ব্যবসায়ীরা স্বাগত জানাই। বর্তমানে রাঙামাটি পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য শতভাগ নিরাপদ। আমি আশা করবো পর্যটকরা আবারও রাঙামাটি ভ্রমণে আসতে শুরু করবেন। 

রাঙামাটি ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস গাইডের সিইও বনকুমুস বড়ুয়া বাপ্পী বলেন, আমরা পর্যটক বরণে সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছি। রাঙামাটি এখন পর্যটকদের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ। আমরা পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করবো। 

রাঙামাটি ট্যুরিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. রমজান আলী বলেন, এমনিতেই পাহাড়ের পর্যটনে খরা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে, এর উপর এই নিষেধাজ্ঞা আমাদেরকে চরম বিপদে ফেলে দিয়েছিল। ২৪ দিন পর হলেও এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হওয়াতে আমরা খুশি হয়েছি। আশা করছি আবার আগের মত পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠবে রাঙামাটি। 

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। সেখানে অনিবার্য কারণবশত ৮ অক্টোবর হতে ৩১ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত সমগ্র রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।