শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে আনন্দমুখর পরিবেশে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের দুই দিনব্যাপী বার্ষিক ফাতেমা রানীর তীর্থ উৎসব শেষ হয়েছে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) মহা খ্রিস্টাযাগের (মূলপ্রার্থনা) মধ্য দিয়ে শেষ হয় এ উৎসব।
‘প্রার্থনার অনুপ্রেরণা ফাতেমা রানী মা মারিয়া, যে পরিবার একত্রে প্রার্থনা করে, সে পরিবার একত্রে বাস করে’ এই মূলসুরে ২৬তম বার্ষিক তীর্থ উৎসব শুরু হয় গতকাল বৃহস্পতিবার। পাপ স্বীকারের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় উৎসব। পরে পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খ্রিস্টযাগ, জপমালার প্রার্থনা, আলোক শোভাযাত্রা, নিশি জাগরণসহ নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের অনুষ্ঠান। এখানে মূল আকর্ষণ আলোর শোভাযাত্রায় মোমের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো গারো পাহাড়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের ঢালে সাধু লিও’র খ্রিষ্টধর্ম পল্লীতে ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে আলোক শোভাযাত্রা বের হয়। মোমবাতি জ্বালিয়ে হাজোরো তীর্থযাত্রী আলোক শোভাযাত্রায় অংশ নেন। নিজেদের পাপমোচন করতে মোমবাতি জ্বালিয়ে তারা প্রায় দুই কিলোমিটার পাহাড়ি পথ অতিক্রম করেন।
এবারের তীর্থানুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকা ধর্ম প্রদেশের সহকারী বিশপ সুব্রত বনিফাস গমেজ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মা মারিয়া আমাদের সব সময় প্রেরণা দেন আমরা যেন প্রার্থনা করি। প্রার্থনার মাধ্যমেই ঈশ্বরের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক স্থাপন করি। তীর্থ উৎসবের মাধ্যমে এবার বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। আমাদের দেশের শান্তি কামনায় প্রার্থনা করা হয়েছে । প্রার্থনাই মূল। এই প্রার্থনার মাধ্যমেই যুদ্ধ শেষ হবে, পরিবারে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে, প্রার্থনার মাধ্যমেই সমাজে সুন্দর বন্ধন তৈরি হবে।’
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই কঠোর নিরাপত্তায় শেষ হয়েছে এবারের তীর্থ উৎসব। আমরা তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা কাজ করেছে। জেলার এটাই বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান।’
প্রসঙ্গত, ১৯৪২ সালে প্রায় ৪২ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারী সাধু লিও’র ধর্মপল্লীটি। ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের ফাতেমা নগরীর আদলে নির্মাণ হওয়ার পর থেকেই এটিকে বার্ষিক তীর্থ স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।