সারা বাংলা

২০০ বছরের কৃষ্ণনগর খাল এখন ভাগাড়

একসময় মাদারীপুরের কালকিনি পৌর শহরের সুপেয় পানির অন্যতম উৎস ছিল ‘দক্ষিণ কৃষ্ণনগর খাল’। এই খাল দিয়ে চলত বড় বড় নৌকা। এখন এই খালে নৌকা চলাচল তো দূরের কথা, পাশ দিয়ে হাঁটাও দায়। ২০০ বছরের এই খাল এখন পরিণত হয়েছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে।

এলাকাবাসী বলছেন, সারাদেশে নদী, খাল ও জলাশয় দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান চললেও দক্ষিণ কৃষ্ণনগর খালটি চোখে পড়ছে না কর্তৃপক্ষের। পানি উন্নয়ন বোর্ডে জানিয়েছে, তারা দ্রুত খালটির অবৈধ দখল উচ্ছেদে অভিযান শুরু হবে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁচা বাজারের উচ্ছিষ্ট, কসাইখানার বর্জ্য, পলিথিন, আখের ছোবড়া ফেলা হচ্ছে দক্ষিণ কৃষ্ণনগর খালে। পাশাপাশি বাসা-বাড়ির ময়লাও ফেলা হচ্ছে খালটিতে। দখলের কারণে খালটি আগের চেয়ে অনেক সরু হয়ে গেছে।

এলাকাবাসী জানান, ২০০ বছরের প্রাচীন এ খালটি দিয়ে এক সময় ছোটো-বড় অসংখ্য নৌযান চলাচল করত। আশির দশকেও এই খাল দিয়ে কৃষি পণ্য নিয়ে বড় বড় ট্রলার চলাচল করতো। এলাকাবাসী গোসলসহ খাওয়ার কাজে ব্যবহার করতেন এই খালের পানি। বর্তমানে দখলের কারণে সরু হয়ে যাওয়ায় এখন ছোটো নৌযান তো দূরের কথা একটা ডিঙ্গি নৌকাও ঢুকতে পারে না। এই অবস্থায় খালটিকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এগিয়ে আসাতে হবে। 

কালকিনি শহরের ব্যবসায়ী জহিরুল বলেন, ‘দখল এবং ময়লা-আবর্জনায় খালটি পুরোপুরি ভরাট হয়ে গেছে। দুর্গন্ধের কারণে খালের পাশ দিয়ে মানুষের চলাচলে বন্ধ হয়ে গেছে। খালের নোংড়া পানিতে জন্ম নেওয়া এডিস মশার কামড়ে অনেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা এ থেকে পরিত্রাণ চাই।’

কালকিনি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মেজবাউল হক বলেন, ‘খালটি এখন প্রায় মৃত অবস্থায় রয়েছে। খালটি রক্ষায় কয়েকবার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। তাতে কোন কাজ হয়নি।’

কালকিনি পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাশ বলেন, ‘খালটি পুনরুদ্ধার করা হবে শিগগিরি। এরসঙ্গে ধারাবাহিকভাবে দখল হওয়া অন্য খালগুলো খনন ও পুনরুদ্ধার করা হবে।’

মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সানাউল কাদের খান বলেন, ‘আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে শিগিগরই খালটি উদ্ধারে অভিযানে নামব।’