সারা বাংলা

চিকিৎসকের ভুলে সিজারিয়ান রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ, ক্লিনিক ভাঙচুর

রাজবাড়ীতে চিকিৎসক ও ক্লিনিক সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় সোনিয়া (২৩) নামে এক সিজারিয়ান রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা শহরের ফায়ার সার্ভিস এলাকায় ‘রাবেয়া প্রাইভেট হাসপাতালে’ হামলা ও ভাঙচুর করেন। 

শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

নিহত সোনিয়া রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের মাটিপাড়া গ্রামের রাশেদুল ইসলামের স্ত্রী।

সোনিয়ার স্বজনদের অভিযোগ, গত ৩১ অক্টোবর রাতে রাবেয়া প্রাইভেট হাসপাতালে ডা. শাহনিমা নার্গিস সিজার করলে সোনিয়ার কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ওই সিজারে অ্যানেসথেসিয়া দিয়েছিল রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ডা. একরামুল করিম উল্লাস। সিজারের সময় চিকিৎসকের ভুলে সোনিয়ার প্রচুর রক্তক্ষরণ, বমি, শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়। সিজারের পর রোগীর শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি হতে থাকলে ডা. শাহনিমা নার্গিস রোগীকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন। 

স্থানীয় একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে গাইনী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহনিমা নার্গিস সোনিয়া নামের রোগীকে রাবেয়া প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার করে। সিজারের সময় রোগীর প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে না পেরে ডা. শাহনিমা নার্গিস রোগীকে তড়িঘড়ি করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। রোগীর স্বজনরা ফরিদপুরে নিয়ে আইসিইউতে চিকিৎসার প্রাক্কালে সোনিয়া মারা যায়। 

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা ও রোগীর স্বজনরা শুক্রবার সকালে রাবেয়া প্রাইভেট হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে এবং মেইনগেট তালা মেরে রাখে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার এবং গাইনী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শাহনিমা নার্গিসের বক্তব্য নিতে তার ব্যক্তিগত নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, রাবেয়া প্রাইভেট হাসপাতালে সিজারিয়ান রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে রোগী পক্ষের লোকজন উত্তেজিত হয়ে হাসপাতালে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশের দুইটি মোবাইল টিম সেখানে পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহীম টিটন বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত কমিটি গঠন করে এর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।