কিশোরগঞ্জ রেল স্টেশনের মাস্টার মো. খলিলুর রহমানকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে এক নারী যাত্রীর স্বজনদের বিরুদ্ধে। শনিবার (২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১টার দিকে তার ওপর হামালা হয়। এসময় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হন স্টেশন মাস্টারের স্ত্রীও। ঘটনার সময় স্টেশনে থাকা এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
আহত স্টেশন মাস্টার খলিলুর রহমান জানান, সম্প্রতি তিনি কুলিয়ারচর থেকে কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনে বদলি হয়ে আসেন। তিনি আগে পরিবার নিয়ে ভৈরবে থাকতেন। সকালে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে এগারসিন্দুর ট্রেনে কিশোরগঞ্জে আসেন তিনি। স্টেশনে নামতেই তার ওপর হামলা হয়। তিনি হামলার ঘটনায় থানায় মামলা করবেন। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন মিয়া জানান, ভৈরব থেকে এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘খ’ বগিতে ওঠেন স্টেশন মাস্টার ও তার পরিবার। এ সময় ওই বগিতে থাকা এক তরুণী টিকিট করেছে কিনা জানতে চান স্টেশন মাস্টারের কাছে। তখন স্টেশন মাস্টারের স্ত্রী তার স্বামী রেলের স্টাফ পরিচয় দিয়ে জানান, তাদের কাছে একটি টিকিট আছে। ভৈরব থেকে তিনটি টিকিট একসঙ্গে পাওয়া যায়নি। দুটি টিকিট সামনের স্টেশন কুলিয়ারচর স্টেশন থেকে সংগ্রহ করা হবে। পরে এ নিয়ে ওই নারী যাত্রীর সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।
তিনি আরো জানান, ওই নারী যাত্রীর বাসা কিশোরগঞ্জ রেল স্টেশনের পাশে। তার নাম টুশি। তিনি তার ভাই অন্তুকে ফোনে জানান, এক ব্যক্তি তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছে। তিনি যেন কয়েকজনকে নিয়ে স্টেশনে থাকেন। ট্রেনটি কিশোরগঞ্জ স্টেশনে থামা মাত্র ৫ থেকে ৭ জন যুবক স্টেশন মাস্টারকে বগি থেকে নামিয়ে মারধর করেন। খবর পেয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশ আহত স্টেশন মাস্টারকে উদ্ধার করে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।
আহত স্টেশন মাস্টারের স্ত্রী উম্মুল সায়খা দিতি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের মির্জাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি জানান, স্বামীকে রক্ষা করতে গিয়ে তিনি নিজেও মারপিটের শিকার হয়েছেন। এ সময় তার গলা থেকে একটি সোনার চেন ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। তার স্বামীর মোবাইল ফোনটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, স্টেশন মাস্টার শঙ্কামুক্ত হলেও তিনি গুরুতর আহত। গলাসহ সারা শরীরে আঘাতের দাগ দেখা গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনের কর্মচারীরা জানান, খলিলুর রহমান ডিউটিরত অবস্থায় ছিলেন। তিনি হালার শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় স্টেশনে দায়িত্বরত কোনো মাস্টার ছিলেন না। পরে কর্তৃপক্ষ আরেক জনকে মাস্টারের দায়িত্ব দিয়ে স্টেশনে পাঠায়। এসব কারণে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেতে এক ঘণ্টা দেরি হয়।