সারা বাংলা

জামালপুরের মেয়র ছানু-ভাই আনুর বিরুদ্ধে নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ 

‘রোজা ছিলাম। তবুও আমাকে মেয়র ছানু মেরেছে। ইফতারে শুধু এক গ্লাস পানি দিয়েছে। এরপরও কয়েক জায়গায় কয়েক দফায় মেয়র ছানু, তার ভাই আনু আমাকে ৪০০-৫০০ বার লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমার হাত-পা ভেঙে দেয়।’

প্রেসক্লাব জামালপুরে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুর নির্যাতনের বর্ণনা দেন জামালপুর শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুর হোসেন আবাহনী।

শনিবার (২ নভেম্বর) জামালপুর শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নুর হোসেন আবাহনীকে নির্যাতনের পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দেওয়ার ঘটনায় সাবেক মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুর শাস্তি দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নুর হোসেন আবাহনী, তার বাবা আব্দুর রশিদ ও মা নূর জাহান বেগম বক্তব্য রাখেন।

এসময় আবাহনী বলেন- ‘২০২৩ সালে ২৮ মার্চ দুপুরে জামালপুর পৌরসভার তৎকালীন মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানুর জমি দখল, মাদক ব্যবসা ও অপকর্ম নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ করি আমি। এই ঘটনার পরপরই মেয়র ছানুসহ তার লোকজন আমাকে পৌরসভায় ডেকে নেয়। সেখানে গেলে আমাকে নিয়ে শহরের পাথালিয়ায় মেয়র ছানুর বাড়ির সামনে আনা হয়। সেখানে প্রকাশ্যে আমাকে মারধর করা হয়। পরে বাড়ির ভেতরে একটি টর্চার সেলে নিয়ে গিয়ে আমাকে বেধড়ক পেটায় মেয়র ছানু, তার ভাই আনোয়ার হোসেন আনু, চাচাতো ভাই তাজু। ইফতারের সময় আমাকে শুধু মাত্র এক গ্লাস পানি দেওয়া হয়। এরপর আমাকে একটি গোপন জায়গায় নিয়ে সেখানে কয়েক দফায় মারধর করা হয়। আমাকে ৪০০-৫০০ বার লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর আমাকে জবাই করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। আমার সারা শরীর রক্তে ভেজা ছিলো। পরে জবাই না করে ক্ষমতার প্রভাবে আমাকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন মেয়র ছানু। আমার অবস্থা দেখে পুলিশ আমাকে নিতে অস্বীকার করলেও ছানু জোর করে পুলিশের কাছে দিয়ে দেয় আমাকে।’

আবাহনীর বাবা আব্দুর রশিদ বলেন- ‘আমার ছেলেকে তারা ঠিক মতো চিকিৎসা করতে দেয় নাই। জোর করে জেলে পাঠাইছে। ঘটনার পর আমরা গ্রামের লোকেরা গিয়ে ডিসি অফিসের সামনে মানববন্ধন করি। পরে আমাদের জোর করে মির্জা আজমের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি (মির্জা আজম) আমাদের আন্দোলন থামাতে বলেন। আর মামলাটি মিমাংসা করার প্রতিশ্রুতি দেন। আমরা আন্দোলন থামালেও মামলাটি এখনো আগের মতোই আছে।’

শারীরিক নির্যাতনের পর উল্টো মামলার আসামি করায় মেয়র ছানুর বিচারের দাবি জানিয়েছে আবাহনী ও তার পরিবার। এছাড়াও দ্রুত মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দাবি জানান তারা।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে পলাতক রয়েছে সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন ছানু।  এসব বিষয়ে বক্তব্য জানতে ফোন দেওয়া হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।