জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও খুলনা জেলা সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু বলেছেন, ‘গত ৩ জুলাই থেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের জাতীয় সংসদে এমনকি সংসদের বাইরেও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার পক্ষে কথা ও যুক্তি তুলে ধরেছেন। রংপুরে আবু সাঈদ হত্যার পর জাতীয় পার্টিই প্রথম ছাত্র-জনতার আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে। আমরাই প্রথমে রাজপথে নেমেছি এবং মিছিল-মিটিং করেছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে আমাদের পার্টির দুজন কর্মী শহিদ হয়েছেন।’
রোববার (৩ নভেম্বর) খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, ‘জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মারুফসহ ১০/১২জন নেতাকর্মী কারাভোগ করেছেন। আমাদের রংপুরের মেয়র নিজে তার কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের মধ্যে খাবার সরবরাহ করেছেন এবং পানি বিলি করেছেন। এমনকি আলোচিত ঢাকার হেফাজত আন্দোলনেও জাতীয় পার্টির সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘খুলনার শিববাড়ি মোড়ে জাতীয় পার্টির নির্দেশে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি খুলনা মহানগর সদস্য সচিব দেশ আহমেদ রাজুর নেতৃত্বে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পানি পান করানোসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। যার ভিডিও ফুটেজ এখনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রয়েছে। এরপরেও আওয়ামী লীগ তথা ফ্যাসিবাদের কথিত দোসর আখ্যা দিয়ে জনগণ থেকে জাতীয় পার্টিকে বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা চলছে। আমরা এ ঘটনার এবং পার্টিবিরোধী চক্রান্তের তীব্র নিন্দা জানাই।’
জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ‘খুলনায় জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা পরিকল্পিত। এ ঘটনার সঙ্গে ছাত্র-জনতা কোনক্রমেই জড়িত নয়। যারা আমাদের পার্টি অফিসটি দখলে নিতে চায়, তাদের উস্কানীতে তৃতীয় পক্ষ এ হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীদের খুঁজে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’
তিনি বলেন, শনিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঠিক মাগরিবের নামাজের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার একটি ব্যানারসহ শতাধিক লোক মিছিল নিয়ে খুলনা জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। সেখানে থাকা চেয়ার-টেবিল, ফ্যান, দুটি টিভি, জেলা ও মহনগর দপ্তর সম্পাদকের মূল্যবান কাজগজপত্রসহ নগদ ২৫ হাজার ২৯০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রনায়ক পল্লী বন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের প্যানা, ছবি, বর্তমান চেয়ারম্যানের ছবি, নেতাকর্মীদের ছবি, পার্টি অফিসের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তারা স্থান ত্যাগ করে। এসময় সেখানে পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা ছিল নিষ্ক্রীয়।’
শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, ‘আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক গাড়ি আসতে চাইলে তাদেরকে বাঁধা দেওয়া হয়। বাঁধা উপেক্ষা করে আসলেও যথা সময়ে না আসতে পারায় আগুন নেভাতে দেরি হয় তাদেরর। এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘হামলা হতে পারে এ বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গত ১ নভেম্বর খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে লিখিতভাবে জানানো হয়। এমনকি সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও হামলার আশঙ্কার কথা জানানো হয়। এরপরেও কীভাবে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটলো এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’