নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন জাদুঘরের প্রধান ফটকের সামনের সেতুটি ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে দু সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে। সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন হয়ে পানাম নগর যাওয়ার রাস্তায় সেতুটির অবস্থান। ভাঙা অংশ জোড়াতালি দিয়ে যানবাহন চললেও সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই।
সরেজমিনে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই রাস্তাটি দিয়ে কয়েকটি শিল্প কারখানার মালবাহী ভারি যানবাহন চলাচল করে। ফলে রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি একমাত্র সেতুটিও ভেঙে গেছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই চলাচলে ঝুঁকি বাড়ছে। সেতুটি সোনারগাঁ পৌরসভা এলাকায় হলেও পৌরসভা থেকে এ ব্যাপারে উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা।
সোমবার (৪ নভেম্বর) এই সড়কে চলাচলকারী অটোরিকশাচালক শাহজাহান বলেন, এই সেতুটি ভেঙে বড় গর্ত হওয়ার কারণে অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছে। সময় উল্টে যায়। আজকে সকালেও একটি অটোরিকশা উল্টে গিয়ে দু'জন নারী মারাত্মক আহত হয়েছেন। আমরা চাই সেতুটি দ্রুত সংস্কার করা হোক।
সেলিনা আহমেদ নামের একজন পথচারী বলেন, এই সেতুটির বেহাল অবস্থা দেখার কেউ নাই। রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অনেক স্কুল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি যাত্রীরা আহত হচ্ছে। বিশেষ করে রাতের বেলা অন্ধকারে এই রাস্তায় প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত ব্রিজটি সংস্কার বা নতুন করে নির্মাণ করা হলে যানবাহন ও যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা হ্রাস পাবে।
তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৩৫ বছর আগে খাসনগর দিঘি থেকে বয়ে চলা খালের ওপর এই সরু সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। সে সময় এই সড়কে রিকশা ও স্কুটার চলাচল করতো, ফলে সরু ব্রিজটিই যথেষ্ট ছিল। বর্তমানে বৈদ্যেরবাজার এলাকার আমান ইকোনোমি জোন, মেঘনা নদীর পাশে আনন্দ বাজার এলাকায় ফ্রেশ কোম্পানি, বৈদ্যের বাজার ঘাটের মাশ ফিড কোম্পানি এবং বিভিন্ন শিল্পকারখানার কারণে হেভিওয়েট ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহনের চলাচল করায় বছরখানেক আগে ব্রিজটিতে ফাটল দেখা দেয়। তবে তা সংস্কারে সড়ক ও জনপদ বিভাগ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। পরিদর্শনের পর তারা একটি নতুন কালভার্ট নির্মাণের আশ্বাস দিয়েই ক্ষান্ত হয়। বর্তমানে ব্রিজটির পশ্চিম পাশে বড় সুরঙ্গের মতো গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক এই ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করছেন, অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হন। কিন্তু ব্রিজটি সংস্কারে কেউ এগিয়ে আসছে না।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস সোমবার বলেন এই ভাঙা সেতুটি নিয়ে আমি আজকে মিটিং করেছি। সেতুটি নতুনভাবে করার জন্য পত্র পাঠানো হয়েছে। সরকারিভাবে এখনো কোন টেন্ডার হয়নি। তাই জরুরিভিত্তিতে সেতুটির সংস্কার করার জন্য আমি ব্যবস্থা নিবো।