মেহেরপুরের গাংনীর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও অফিস সহায়ককে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) রাতে লাঞ্ছিত হওয়া মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক নিজে বাদী হয়ে গাংনী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এরআগে সোমবার শিক্ষা অফিসের সামনে গাংনীর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক ও অফিস সহায়ক তোফাজ্জেল হোসেন কয়েকজন দুর্বৃত্তের হামলা ও মারধরের শিকার হন।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বানী ইসরাইল বলেন, শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তবে তবে গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
শিক্ষা অফিসার হোসনে মোবারক জানান, আদালতে দায়েরকৃত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ (বিচারক) মো. তহিদুল ইসলাম একটি পিটিশন মামলার নিস্পত্তির আদেশ দেন। ৭ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত অনুসন্ধান প্রতিবেদন এবং উক্ত প্রতিবদনের সমর্থনে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের কাগজপত্রসহ প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রমাণ দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়। সে মোতাবেক সোমবার বাদী ও বিবাদীর শুনানীর আহবান করা হয়। মামলার বাদী সীমা খাতুন ও বিবাদী তুহিন আলীকে নিয়ে উভয়পক্ষের স্বাক্ষীদের নিয়ে শুনানী করছিলেন। এসময় একদল দুর্বৃত্ত শিক্ষা অফিসের সামনে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। শিক্ষা অফিসের অফিস সহায়ক শান্ত হতে বললে বাদীপক্ষের লাকজনের উপর চড়াও হয় এবং কিল ঘুষি মারতে থাকে।
হোসনে মোবারক বলেন, বাইরে হট্টগোল ও গালিগালাজ শুনতে পেয়ে অফিসের গেটের সামনে আসলে দুর্বৃত্তরা আমার উপর চড়াও হয় এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেস্টা করে। এসময় গালিগালাজ করে শার্টের কলার ধরে টানাহেচড়া করে লাঞ্ছিত করে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে মোরবককে মারধরের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করি। এরপরও আমার সামনেই আবারও তাকে লাঞ্ছিত করে। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করি। পরবর্তীতে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কঠোর ভুমিকা রাখেন জেলা প্রশাসক স্যার।
তিনি আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুর্বত্তদের শনাক্ত করা হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাব গাংনী থানার ওসি বানী ইসরাইল, মেহেরপুরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনী দল, র্যাব-১২ এর ক্যাম্প ইনচার্জ আশরাফুল্লাহকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। ঘটনায় জড়িতদের দ্রত আটক এবং আইনগত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন বলেও উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গাংনী উপজেলার হাড়িয়াদহ গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে সীমা খাতুনের সাথে একই উপজেলার ঝোরপাড়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে তুহিন আলীর ১ বছর আগে নিকাহ রেজিস্টারের কার্যালয়ে বিয়ে হয়। পরবর্তীতে তুহিন আলী বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে সীমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এনিয়ে সীমা খাতুন আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা দ্রত নিষ্পত্তি করতে ইতোপূর্বে গাংনী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হলে তিনি তুহিনের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। বাদি সীমা খাতুন নারাজি দিলে পরবর্তীত উক্ত মামলা পুনঃপ্রতিবেদন করে নিস্পত্তি করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। সেই আলোকে তিনি উভয়পক্ষর শুনানী করছিলেন।