চট্টগ্রামের কুমিরায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (আইআইইউসি) আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ নদভীর নেতৃত্বাধীন ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান ও তার সিন্ডিকেট সদস্যরা মিলে কোটি কোটি টাকা লোপাটের ঘটনা তদন্তে নেমেছে দুদক। প্রাথমিক তদন্তে মিলেছে লুটপাটের সত্যতা।
মূলত, আওয়ামী লীগের দলীয় সাবেক এমপি অধ্যাপক আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ভাই খালেদ মাহমুদের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে এই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে লুটপাট চলেছে বলে অভিযোগ।
আইআইইউসির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আজাদী জানান. ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নদভী ও তার সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে। দুদকের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কার্যক্রমও চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দুদককে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
অভিযোগে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা এবং খালেদ মাহমুদের নেতৃত্বাধীন সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট বছরের পর বছর চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে লুটপাট চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের একেকটি মিটিং-এ উপস্থিত থাকার জন্য ট্রাস্টি বোর্ডের এসব সদস্যরা লাখ লাখ টাকা সম্মানি নিতেন। স্ত্রী সন্তানদের বিদেশ ভ্রমণ, চিকিৎসা, গাড়িক্রয়সহ নানাখাতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ড থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আইআইইউসি টাওয়ার থেকে এই সিন্ডিকেট ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনাকাটা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, নিয়োগ, পদোন্নতিসহ বিভিন্নখাতে অর্ধশত কোটি টাকা লুটপাট করেছেন নদভী সিন্ডিকেট।
দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর উপপরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত আইআইইউসি’র আর্থিক অনিয়ম দুর্নীতির তদন্তের বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্যিক টাওয়ার থেকে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্নখাতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য ও দলিলে দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। অনুসন্ধান অব্যাহত আছে।