সারা বাংলা

‘সব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে নির্বাচন, এটা যুক্তি হতে পারে না’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে, সেই নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রতিনিধি ঠিক করবে। এখানে কোনো দ্বিমত পোষণ করলে হবে না। বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না, বিএনপি রাজনীতি করে জনগণের জন্য। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে দেশের সব প্রতিষ্ঠান নষ্ট করে দিয়েছে। সব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করে নির্বাচনে যাবো-এটা কোনো যুক্তি হতে পারে না। আমাদের সংস্কার প্রয়োজন আছে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। 

শনিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায়  খুলনা নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মহানগর বিএনপি আয়োজিত তিন দিনের কর্মসূচির শেষ দিনে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা’ সভায় তিনি এ কথা বলেন। 

মঈন খান বলেন, ‘সংস্কার এমন কোনো জিনিস নয় যে-আজকে সংস্কার করে তা তালাবদ্ধ করে রাখবো। তারপর আগামী ১০, ২০ ও ৫০ বছরেও আর সংস্কার করবো না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কী কী সংস্কার করা প্রয়োজন তা চিহ্নিত করতে হবে। সেগুলো সংস্কার করে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে হবে-এটাই দেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রত্যাশা।’ 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ যখন পাকিস্তানের হায়নারা এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিল তখন আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল প্রশ্ন করে তিনি বলেন, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কোনো ভূমিকা রাখেনি। মহান স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান বীর উত্তম প্রথমে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগ কাপুরুষের মতো দেশের জনগণকে বিপদে ফেলে পালিয়ে গিয়েছিল। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মুখে আবারো সেই একইভাবে তারা পালিয়েছে। বাংলাদেশকে কারা রক্ষা করেছে সেই সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। আওয়ামী লীগ কখনোই দেশের স্বার্থ রক্ষা করেনি।’ 

বিএনপির এই বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ৭১ সালে প্রথম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ঘোষণ দেন। তিনি সম্মুখ সমরে ছিলেন। এসবের জন্য তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। স্বাধীনতার পরে আওয়ামী লীগ রক্ষীবাহিনী তৈরি করে ৩০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিল। ৭২-৭৫ পর্যন্ত তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। দেশের মানুষ ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানকে ক্ষমতায় এনে সেই বাকশালের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়েছে নির্বাসিত গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য।’ 

খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য খান রবিউল ইসলাম রবি, অ্যাডভোকেট আক্তার জাহান রুকু, সাংবাদিক রাশিদুল ইসলাম প্রমুখ। 

পরে সভাস্থলে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে প্রকাশিত বিশেষ ক্রোড়পত্র ‘প্রথম বাংলাদেশ’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি। সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এর উদ্যোগে  সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।