জুম্ম জাতির জনক মানবেন্দ্র নারায়ণ লারম’র (এমএন লারমা) ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জুম্ম জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে রাঙামাটিতে। রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির আয়োজনে রাঙামাটি জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা’র অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্মরণ সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, সদস্য মনি চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম রাঙামাটি অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সংস্কৃতিকর্মী শিশির চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহ-সভাপতি এডভোকেট ভবতোষ দেওয়ানসহ অনেকে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি ডা. গঙ্গা মানিক চাকমা। শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা।
সভায় বক্তারা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সংগ্রামী জীবনের কথা তুলে ধরে বলেন, এমএন লারমা তার জীবন শোষিত, নিপীড়ন ও অধিকারহারা মানুষের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন। এমএন লারমা জীবনভর স্বজাতির অধিকারের লড়াইয়ে সামিল ছিলেন। লড়াই সংগ্রাম ছাড়া পৃথিবীতে কোনো জাতির অস্তিত্ব টিকে থাকেনি। তাই অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে তরুণদেরকেই অধিকতর সামিল হতে হবে।
প্রসঙ্গত, এমএন লারমা ১৯৭০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম আসন থেকে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ৪ দফা সংবলিত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামা পেশ করেন। সেই সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) গঠন করে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসংহতি সমিতির মনোনীত প্রার্থী হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম-১ আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। একই বছর পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতির দায়িত্ব নেন। এমএন লারমা ১৯৮৩ সালের ১০ নভেম্বর ৮ সহযোগীসহ দলের বিভেদপন্থী গ্রুপের হাতে নিহত হন।