সারা বাংলা

‘ঢাকাকেন্দ্রিক রাষ্ট্র গঠন, চলবে না চলবে না’

অন্তর্বর্তী সরকারের ছাত্র-জনতার অংশীদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে উপদেষ্টা নিয়োগের প্রতিবাদে রাজশাহীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার (১১ নভেম্বর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে নগরের তালাইমারি এলাকায় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ঢাকাকেন্দ্রিক রাষ্ট্র গঠন, চলবে না চলবে না’ স্লোগান দেন। 

এ ছাড়া ‘উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলা, চলছে কেন অবহেলা’, ‘উপদেষ্টায় ওরা কারা, জবাব চায় বিপ্লবীরা’, ‘অপরাজনীতির কালো হাত, ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আমার ভাই কবরে, ফারুকী কেন সরকারে’, ‘বশীর কেন সরকারে, আমার ভাই কবরে’, ‘তেলবাজদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আওয়ামী লীগের দালারেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ সহ নানা স্লোগান দেন।

পরে তালাইমারি মোড়ে এক সমাবেশে তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। এগুলো হলো, এক কেন্দ্রিকতা বাদ দিয়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করে আন্দোলনের সমস্ত অংশীদারকে রাষ্ট্র গঠনে সমানভাবে সুযোগ দেওয়া; ছাত্র জনতার মতামত না নিয়ে উপদেষ্টা নিয়োগের জবাবদিহিতা করা ও কোন প্রক্রিয়ায় সচিবালয়ে উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয় তা জাতির সামনে স্পষ্ট করা এবং ছাত্রজনতার অংশগ্রহণ ও ঐক্যমতের ভিত্তিতে ছায়া সরকার প্রতিষ্ঠা করা।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক গোলাম কিবরিয়া মো. মেশকাত চৌধুরী মিশু বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্ররা সব আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে কিন্তু বারবার ছাত্রদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। এখন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর ছাত্রদের সঙ্গে আবারও প্রতারণা করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সরকার গঠনে ছাত্রদের অংশদারিত্ববিহীন সিদ্ধান্তে ফ্যাসিবাদের দোসরদের ডেকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ দেশে পুনরায় স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার যে চক্রান্ত করা হচ্ছে, তা কখনও বাস্তবায়ন হবে না। নতুন এ দেশ গড়তে আমরা শহিদ ও আহত ভাইদের প্রতি দায়বদ্ধ। সরকার গঠনে একটি শহর বা একটি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিকতা দেখা দিয়েছে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা বলেন, ‘রাষ্ট্রগঠন ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনে ঢাকার বাইরে কাউকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এ রাষ্ট্র প্রত্যেকটি জনগণের, এখানে কোনো বঙ্গের বন্ধুত্ব চলবে না। প্রত্যেকটি অঞ্চলকে এ রাষ্ট্রগঠনে সমান সুযোগ দিতে হবে। ঢাকার এসি রুমে বসে তৃণমূলের জনগণের মন বোঝা সম্ভব নয়। এভাবে চলতে থাকলে এ সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্রমান্বয়ে জনগণের রোষানলে পড়তে থাকবে। আজকে বিভিন্ন কায়দায় উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। যারা গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকারকে ফুয়েল দিয়ে লালন-পালন করেছেন, তারা কীভাবে উপদেষ্টা প্যানেলে জায়গা পায়? আমরা জানতে চাই, কোন আধার ঘরের সিদ্ধান্ত সচিবালয়ে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পৃষ্ঠপোষক ও মানবাধিকারকর্মী রাশেদ রাজন, সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম ও সালাউদ্দীন আম্মার। এ সময় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।