সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিয়াকে অপসারণের দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শেরপুর প্রেসক্লাব।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে শেরপুর প্রেসক্লাবের প্যাডে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বরাবর দেওয়া চিঠি জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেছেন সাংবাদিক নেতারা।
চিঠি পাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান।
চিঠিতে শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা, কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ এবং সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদলের সই রয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, গত ১১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে শেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ওষুধ ক্রয়ের ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলা ও লাঞ্ছনার শিকার হন সময় টিভির শেরপুরের স্টাফ রিপোর্টার শহিদুল ইসলাম হিরা ও চিত্র সাংবাদিক বাবু চক্রবর্তী। এ ঘটনায় জেলার সব সাংবাদিক ক্ষুব্ধ হন। এরই প্রেক্ষিতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেলিম মিয়াকে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শেরপুর থেকে প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে চিঠিতে। অন্যথায় জেলার সব সাংবাদিক বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন বলেও জানানো হয়।
চিঠি হস্তান্তরের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা, কার্যকরী সভাপতি আব্দুর রফিক মজিদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুগনিউর রহমান মনি, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল, শাহরিয়ার মিল্টন, মো. আলমগির হোসেন ও বিপ্লব দে কেটু প্রমুখ।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হিরা বলেন, ‘একটা সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য যতগুলা নিয়ম আছে প্রত্যেকটি নিয়ম মেনেই আমি প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেছি। প্রথমে সিভিল সার্জনকে অবহিত করেছি। হাসপাতালের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহমদ্দুননবী সজলের মাধ্যমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে কথা বলেছি। পরে তত্ত্বাবধায়ক এসে খবর না করার জন্য চাপ দিলেন। পরবর্তীতে লাঞ্ছিত করলেন। এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। তিনি শুধু আমাকে আঘাত করেননি, সাংবাদিক সমাজকে আঘাত করেছেন। শেরপুর থেকে তার অপসারণ চাই।’
শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এমন হামলা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য বাধা। এর মাধ্যমে বাজে নজির স্থাপন হয়। আমরা শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের প্রত্যাহারের দাবি করছি। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাবো।’
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেলিম মিঞা মুঠোফোনে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) শেরপুর জেলা শাখার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে বিএমএ নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পরে বিস্তারিত জানানো যাবে।’
শেরপুর সদর থানার ওসি জুবাইদুল আলম বলেন, ‘গতকাল সোমবার রাতে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হীরা সেলিম মিঞাকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি আমি শুনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথাও হয়েছে। প্রেসক্লাবের দেওয়া চিঠি গ্রহণ করা হয়েছে।’