অবশেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দেওয়া কথা অনুযায়ী গাজীপুরের টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের ৫টি কারখানার সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক ও স্টাফদের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টা থেকে শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া আগামীকাল শনিবার থেকে কারখানা যথারীতি খুলে দেওয়া হবে বলে নোটিশে জানানো হয়েছে।
গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকার টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের ৫ টি কারখানা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে- টিএনজেড অ্যাপারেলস বেসিক ক্লোথিং, বেসিক নিটওয়্যার, অ্যাপারেলস প্লাস ইকো ও অ্যাপারেলস আর্ট লিমিটেড। এসব কারখানায় স্টাফসহ সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে গত শনিবার সকাল ৯ টা থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে। পরে গত সোমবার রাতে ঢাকায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করে বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হলে রাতেই অবরোধ প্রত্যাহার করে। আগামী রোববার পর্যন্ত সময় নেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টায় কারখানার শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকেউন্টে টাকা পাঠানো হয়। বেতন পেয়ে শ্রমিকরাও সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
কারখানার শ্রমিক আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা টেহার লাইগা কাম করি। মাস শেষে টেহা পাইলে আর কোনো কথা নাই। টেহা পাইছি টেহা ওঠাইয়া বাড়ির ভাড়া ও দোকান বাকিও দিয়া দিছি।’
গত সোমবার রাতে শ্রম ভবনে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে টিএনজেড গ্রুপের ৩১ জন শ্রমিক প্রতিনিধি, বিজিএমইএর নেতারা এবং শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সর্বসম্মতিক্রমে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে বলা হয়, ১৭ নভেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের এবং ৩০ নভেম্বর অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। গ্রুপের কারখানাগুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত খুলে দেবে। এ ছাড়া ৩০ নভেম্বরের আগে কেউ যদি আবার সড়ক অবরোধ করেন, তাহলে টাকা পরিশোধ করা হবে না বলেও জানানো হয় বৈঠক থেকে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বেতন পরিশোধ করা হয়েছে।
বেতন পরিশোধ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. হেদায়তুল হক।
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে সহযোগিতা করায় উপদেষ্টাসহ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শফিকুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব সবুর হোসেন, বিজিএমইএর অতিরিক্ত সচিব রফিকুল ইসলামের প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তারা শ্রমিকদের অবরোধ প্রত্যাহার করার বিষয়ে সব রকমের সহযোগিতা করেছেন।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার কারখানার শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে জননিরাপত্তায় হুমকি ও দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক আবদুল হালিমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।