বকেয়া বেতনের দাবিতে গাজীপুর মহানগরের চক্রবর্তী এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেছেন। আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিক্ষোভ করে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উভয় দিকে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।
কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরের সারোবো এলাকায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে বেশ কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গত কয়েক মাস ধরে শ্রমিকরা প্রতি মাসেই আন্দোলন করে বেতন আদায় করছেন। চলতি মাসেও আশপাশের প্রায় সব কারখানার বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হলেও চলতি মাসের ১৬ তারিখ হয়ে গেলেও বেক্সিমকোর শ্রমিকরা বেতন পায়নি। বেতনের দাবিতে আজ সকাল থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানার ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কারখানা থেকে কিছু সামনে চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই সড়কের উভয় দিকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা।
শিল্প পুলিশ জানায়, বেক্সিমকো পার্কে স্টাফসহ ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। প্রতি মাসে তাদের বেতনের পরিমাণ হয় ৮০ থেকে ৮২ কোটি টাকা। প্রতি মাসের ৭ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে তাদের বেতন দেওয়া হতো। কিন্তু মালিকদের কেউ না থাকায় এখন বেতন ঠিকমতো পাচ্ছেন না। যার কারণে তারা গত বৃহস্পতিবার থেকে আন্দোলন শুরু করে। গতকাল শুক্রবার থাকায় তারা আন্দোলনে যায়নি। আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তারা চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে আছেন। এতে উভয় দিকে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিকল্প পথে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, এক মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বেক্সিমকো কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছে। এতে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন। তারা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন।
এর আগে গাজীপুরের মালেকের বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক টানা ৫২ ঘণ্টা অবরোধের পর শ্রম সচিব এক মাসের বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলে সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুর ২টার পর টিএনজেড গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। অবরোধ তুলে নেওয়ার এক ঘণ্টা পর শ্রমিকরা পুনরায় মহাসড়ক অবরোধ করেন। তাদের দাবি, আশ্বাস নয়, বেতন চান। বেতন পেলেই তারা অবরোধ প্রত্যাহার করবেন।
এ ঘটনায় গত বুধবার কারখানার শ্রমিকদের বেতন না দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এবং শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে জননিরাপত্তায় হুমকি ও দুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে টিএনজেড গ্রুপের পরিচালক আবদুল হালিমকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দেওয়া কথা অনুযায়ী টিএনজেড অ্যাপারেলস গ্রুপের ৫টি কারখানার সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক ও স্টাফদের বেতন পরিশোধ করা হয়। পরে আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে কারখানা যথারীতি খুলে দেওয়া হয়।