সারা বাংলা

সেন্টমার্টিনে পর্যটন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দাবি: সংকটে জনজীবন

সরকারি ঘোষণায় সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের রাত্রিযাপন সীমিতকরণ ও ভ্রমণে আরোপিত বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোট।

রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এ সংবাদ সম্মেলনে জোটের চেয়ারম্যান শিবলু আজম কোরেশি সভাপতিত্ব করেন।

শিবলু আজম কোরেশি বলেন, ‘সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল অর্থনীতির ধস নেমেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, তরুণ উদ্যোক্তা, ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ী, হোটেল-রিসোর্ট মালিকসহ সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’

ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে এবং দাবির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘সেন্টমার্টিনের ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ আজ বেকার। তরুণদের কর্মসংস্থান হ্রাস পাওয়ায় তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দিকে ধাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা এমএ রহিম জিহাদী বলেন, ‘সারা বিশ্ব যেখানে পর্যটন শিল্পের প্রসারে কাজ করছে, সেখানে আমাদের পর্যটন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার অজুহাতে নেওয়া এ সিদ্ধান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। এটি অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংকট তৈরি করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার যদি এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করে, তবে বাধ্য হয়ে দ্বীপের মানুষ নিজেরাই ভিন্ন পথে যেতে পারে। এতে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, চোরাচালান, মানব পাচার এবং অপরাধ প্রবণতা বাড়বে।’

সংকট উত্তরণে প্রস্তাবনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সরকার যদি সত্যিই পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেষ্ট হতে চায়, তবে স্থানীয় মানুষের জীবন ও জীবিকা রক্ষার সঠিক পরিকল্পনা নিতে হবে। সরকারের একতরফা সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

তারা দাবি করেন, পর্যটকদের রাত্রিযাপনের অনুমতি ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলে পর্যটন শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সেন্টমার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত রাখার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান এবং প্রয়োজন হলে আরও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব), সেন্টমার্টিন হোটেল মালিক সমিতি, ই-ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ট্যাব), বোট মালিক সমবায় সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।