সারা বাংলা

হালুয়াঘাটে স্থলবন্দর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরের কয়লার আমদানি ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে হামলা, লুটপাট ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন, হালুয়াঘাট ব্যবসায়ী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক নাদিম আহমেদ। একই দিন বিকালে উপজেলা বিএনপি ও অংঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে ইমরান সালেহ প্রিন্সের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন দলীয় নেতৃবৃন্দ।

জানা যায়, শনিবার বেলা দুইটায় কয়লা ব্যবসাকে কেন্দ্র করে উপজেলার করইতলী স্থলবন্দর ও গোবরাকোড়া স্থলবন্দরের ৪টি আমদানিকারক সমিতির সমন্বয়ে ভারতীয় রপ্তানীকারকদের সাথে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সমিতির কর্মকর্তা, সদস্য ও উপদেষ্টা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।

যৌথসভায় কড়ইতলী কোল অ্যান্ড ইম্পোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেনকে জানানো হয়নি অভিযোগ এনে গোবড়াকুড়া আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের মহাসচিব অশোক সরকার অপুকে শারীরিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিল্লাল হোসেনের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং হালুয়াঘাট ব্যবসায়ী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি নাদিম আহমদের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট চালায় বলেও অভিযোগ।

এ ঘটনায় রাতেই হালুয়াঘাট থানায় অশোক সরকার অপু ও নাদিম আহমেদ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেন।

এ নিয়ে ব্যবসায়ী উন্নয়ন সমিতিরি সভাপতি নাদিম আহমদ নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে নাদিম আহমদ অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের নির্দেশনায় তার ক্যাডার বাহিনী মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে এবং তার বাসায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় হামলাকারীরা ঘরে থাকা আলমারি ভেঙে ২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার এবং নগদ ৩৫ লাখ টাকাসহ অন্তত ১২ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করে। এতে প্রায় ৭৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে বলে দাবি করেন নাদিম। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে হুকুমের আসামী করে হালুয়াঘাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’

অপরদিকে বিকালে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের নামে মিথ্যা প্রপাকান্ডা ও অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে স্থানীয় অগ্রযাত্রা কো-অপারেটিভ সমিতির হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি নাদিম আহমেদকে হালুয়াঘাটের কথিত দরবেশ। নাদিম আহমদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপ ধারণ করেন। কখনও আ’লীগ কখনও বিএনপি আবার কখনও জামায়াত সেজে বিভিন্ন ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় হালুয়াঘাটে কয়লা ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ নানা অপকর্ম ও কূট কৌশল করে আসছেন। তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এবং বিএনপির সুনামকে নষ্ট করতে হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ার জনপ্রিয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দেন। আমরা উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তার এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

এবিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ সম্পুর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলন করে আমি জড়িত কিনা বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।’

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই পক্ষ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’