সারা বাংলা

আওয়ামী লীগকে নাৎসি পার্টির সাথে তুলনা করলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক আলোচনা সভায় সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, আমি জার্মানির একজন সাংবাদিককে বলেছি ১৯৪৫ সালে নাৎসি বাহিনীকে আপনারা নিজেরাই নিষিদ্ধ করেছেন। সেখান থেকেই বোঝা উচিত আওয়ামী লীগের কি হবে। 

সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে নবীন চোখে গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

আসিফ মাহমুদ বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। গণতন্ত্রের কথা বলে; নির্বাচনের কথা বলে অনেকেই আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার কথা বলে। ডেমোক্রেসির কথা বলে দূতাবাসগুলো চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করছে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যখন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করি, তখন রাজনৈতিক দলের অনেকেই তাদের বক্তৃতা, কথায় তা বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে। আমি জার্মানির একজন সাংবাদিককে বলেছি ১৯৪৫ সালে নাৎসি বাহিনীকে আপনারা নিজেরাই নিষিদ্ধ করেছেন। সেখান থেকেই বোঝা উচিত আওয়ামী লীগের কি হবে।”

তিনি বলেন, “আবরার ফাহাদের মৃত্যু থেকে দেশপ্রেমকে ধারণ করে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যে লড়াই সে লড়াই আজও চলছে। তার অংশ হিসেবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। তবে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ এখনো ঠিকভাবে  হয়নি।” 

তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যয়ভার বহন করা হবে। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালকে বিশেষায়িতভাবে জুলাই বিপ্লবে আহতদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করে দেউলিয়াত্বের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।” 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করতে সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের কাউন্টার বয়ান তৈরি করতে হবে। ফ্যাসিবাদ যাতে ফিরে না আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। ৭১ এ স্বাধীনতার পর ভাসানি বলেছেন আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। আমরাও বলছি ২৪ এর অভ্যুত্থানের পরও আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয় নাই। আমাদের সামাজিক নিজেদের ক্রিয়েটিভিটি, উদ্যম ও সাহসের মাধ্যমে সে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সমগ্র ক্ষেত্রে ১ দফার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।” 

আলোচকের বক্তব্যে সোস্যাল এক্টিভিস্ট সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহ বলেন, “গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যেটা করছে তা শুধু এই ১৫ বছরে তৈরি হয়নি। শেখ মুজিবের সময় থেকে এর শুরু হয়েছিল। ৭০ এর নির্বাচনে মানুষ ভোট দিয়ে শেখ মুজিবকে নির্বাচিত করলো পরে স্বাধীন বাংলাদেশ শেখ মুজিব সেটা এক্সপ্লোয়েট করেছে। আপনার আশপাশের আওয়ামী লীগের লোকজনকে জিজ্ঞেস করবেন তারা অনুশোচনা করে কিনা? অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখবেন তারা বলবে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কোনো অনুশোচনা নাই।” 

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন- উপস্থাপক ও আইনজীবী মানজুর আল মতিন, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ শান্ত। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. লুৎফুল এলাহী এবং পরিবেশ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন রুনু।