সারা বাংলা

শেখ হাসিনা বিদায় হলেও দেশে গণতন্ত্র ফেরেনি: আব্দুস সালাম

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেছেন, “শেখ হাসিনা বিদায় হইছেন কিন্তু এখনো দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসেনি। আমাদের নেতা তারেক রহমান ফিরে আসেননি। তাই এই সরকারকে বলব- নিরপেক্ষ সরকার হওয়ার চেষ্টা করেন না। নিরপেক্ষ সরকার না আপনি।’

বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী নগরের বাটার মোড়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আপনাকে আমরা এনেছি। হাসিনাকে বিদায় করে, গণঅভুত্থানের পরে এই অন্তর্বর্তী সরকার আমরা এনেছি। তাই নিরপেক্ষতার নামে আওয়ামী লীগ যাতে পুনর্বাসিত না হয়, সেদিকে কিন্তু জনগণ খেয়াল রাখছে।’

তিনি বলেন, “যদি ৭ নভেম্বর না ঘটত, তাহলে সেদিনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা আমরা হারাতাম। তাই আজ আমাদের শপথ নিতে হবে, তাঁবেদার সরকার আর যাতে ফিরে না আসতে পারে। গত ১৫ বছর ভারতীয় তাঁবেদার সরকার ক্ষমতায় ছিল, ক্ষমতায় থেকে মানুষের ভোটের অধিকার তারা কেড়ে নিয়েছে।”

আওয়ামী লীগের নেতারা কীভাবে ভারতে পালাচ্ছেন এমন প্রশ্ন তুলে আব্দুস সালাম বলেন, “আজকের প্রশ্ন করতে চাই, রাজশাহীর যে অবৈধ মেয়র ছিলেন সেই লিটন কোথায়? কোথায় আছেন?”

তিনি বলেন, “সীমান্তে কৃষককে হত্যা করা হয়, শ্রমিক হত্যা করা হয়, ফেলানিকে হত্যা করে তারকাটায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। সীমান্ত পার হয়ে এই আওয়ামী লীগের হোমড়া-চোমড়ারা কীভাবে ভারতে যাচ্ছেন এই সরকারের কাছে আমরা জিজ্ঞাসা করতে চাই। তাই বলব, তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক।”

দ্রব্যমূল্যের দাম কমিয়ে সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব জিনিসপত্রের দাম কমান। চাল, ডাল, তেল, লবণের দাম কমান। এখন উপদেষ্টাদের দেখি, তারা প্রায় আড়াইশো স্টেডিয়াম বানানোর পরিকল্পনা করছেন। স্টেডিয়াম বানানোর কাজ আপনাদের না। আপনাদের কাজ দ্রুত নির্বাচন আয়োজন করা।”

তিনি বলেন, “গণতন্ত্র রক্ষা করতে হলে বিএনপি, তারেক রহমান, বেগম খালেদা জিয়ার কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, আমাদের সঙ্গে আন্দোলনকারী যে রাজনৈতিক দলগুলো ছিল, তাদের নিয়ে আমরা আগামী নির্বাচন করব। একসঙ্গে আমরা নির্বাচন করব। ঐক্য যেন নষ্ট না হয়। সবার সঙ্গে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। এটাই তারেক রহমানের নির্দেশ।”

রাজশাহীতে নেতাদের দ্বন্দ্ব-বিভেদের দিকে ইঙ্গিত করে আব্দুস সালাম বলেন, “ঐক্যবদ্ধভাবেই রাজশাহীকে গড়ে তুলতে হবে। এখানে ঈসা ভাই আছেন, সদস্য সচিব মামুন আছেন। এর বাইরে রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিনু সাহেব আছেন। সাবেক মেয়র বুলবুল আছেন। এখানে মিলন আছে। ঐক্যবদ্ধভাবেই কিন্তু রাজশাহীকে গড়ে তুলতে হবে। যদি রাজশাহী মহানগরীতে ঐক্য নষ্ট হয়, এই কয়জন নেতাই দায়ী থাকবেন। তারেক রহমানের নির্দেশ- ঐক্যবদ্ধভাবে সংগঠন করে তুলতে হবে। বড় নেতা যারা, তাদের দায়িত্ব বেশি। সেই দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন। এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।”

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈসা। সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ সমাবেশ পরিচালনা করেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলার আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, কেন্দ্রের সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, দেবাশিষ রায় মধু, রাজশাহী নগরের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-আহ্বায়ক নজরুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন, ওয়ালিউল হক রানা, জয়নাল আবেদিন শিবলী, জেলার সদস্য তোফাজ্জল হোসেন তপু ও গোলাম মোস্তফা মামুন প্রমুখ।

সমাবেশে শেষে বাটার মোড় থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি আলুপট্টি মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। এই শোভাযাত্রায় জেলা ও মহানগর বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।