বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডের ইনচার্জসহ দুইজনকে আটক করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওই ওয়ার্ড থেকে তারা দামি ওষুধ, সুতা এবং গ্লাভস বাইরে পাচার করছিলেন বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) এক রোগীর স্বজনের মাধ্যমে ব্যাগ ভর্তি করে এসব মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় তাদেরকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, সিনিয়র স্টাফ ও গাইনি ওয়ার্ডের ইনচার্জ মোছা. ফেরদৌসী বেগম (৪২) ও ক্লিনার হিরামতি বেগম (৩২)। তারা ওই ওয়ার্ডের রোগী ফাতেমা বেগমের স্বামী মোজাহার আলীর মাধ্যমে ব্যাগভর্তি মালামাল হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে রোগীর স্বজন মোজাহার আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বাড়ি জয়পুরহাট সদর উপজেলার মোজাহিদপুর এলাকা। তিনি গত ১০ নভেম্বর তার স্ত্রী ফাতেমাকে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করান। আজ তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। তারা যখন রিলিজ নিয়ে আসছিলেন এমন সময় ক্লিনার মিরামতি তাকে ওই ব্যাগ হাসপাতালের বাইরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি সরল মনে ব্যাগটিসহ স্ত্র্রীকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসছিলেন। কিন্তু গেটের সামনে হাসপাতালের কয়েকজন ব্যক্তি তাকে ওই ব্যাগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান ব্যাগে কি আছে তিনি জানেন না। হিরামতি তাকে ব্যাগটি দিয়েছেন এবং হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন । পরে হিরামতি ও ফেরদৌসি বেগমকে আটক করা হয়।
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল গেটে আনসার সদস্যরা আটকের পর তাদেরকে হাসপাতালটির উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাদেরকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তিনি মেডিক্যাল ফাড়ি পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ তাদেরকে সেখানে নিয়ে যায়।
উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, “একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী গেটে আটক হয়েছেন। এছাড়া গাইনি ওয়ার্ডের ইনচার্জকেও আমরা অবজারভেশনে রেখেছি।”
ওই ব্যাগে কি ছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, “শুধু গ্লাভস পাওয়া গেছে।”
ওষুধ, সুতা এবং গ্লাভস এর কথা শোনা যাচ্ছে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “শুধু হ্যান্ড গ্লাভস পাওয়া গেছে। পুরো ব্যাগ তল্লাশি করে আমরা গ্লাভসই পেয়েছি। প্রায় ৩০০ জোড়ার মতো গ্লাভস ছিলো।”
এরকম অভিযোগ তাদের বিরদ্ধে বিরুদ্ধে আগেও ছিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এরকম কিছু আগে আমরা জানতে পারিনি। বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এ বিষয়ে শনিবার থেকে কাজ শুরু করবেন। তদন্তের পর আমরা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবো। পরে আইনি ব্যবস্থার প্রয়োজন হলে সেটাও নেবো।”
মেডিক্যাল ফাঁড়ির এএস আই মহসিন আলী বলেন, “তাদেরকে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছিলো। তবে হাসপাতালের উপ-পরিচালক নাকি জানিয়েছেন বিষয়টি তারা দেখবেন। এরপরে তাদেরকে ফাঁড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আইনগত বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে কিনা এখনও আমাদেরকে জানানো হয়নি।