আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী হবিগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট মির্জা সিফাত-ই-খোদা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বহিস্কৃত ওয়ার্ড দলনেত্রী জোৎস্না বেগম জোনাকী আনসারের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। হয়রানির উদ্দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি যৌন নিপীড়নের মামলাও করেছেন।
বহিস্কৃত হবিগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড দলনেত্রী জোৎস্না বেগম জোনাকী কর্তৃক জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচারের ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে হবিগঞ্জ জেলা কমান্ড্যান্ট মির্জা সিফাত -ই-খোদা জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি লিখিত বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে তিনি জানান, জোৎস্না বেগম জোনাকী দীর্ঘদিন যাবত রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের সাথে জড়িত। গত শারদীয় দুর্গাপূজায় হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের সদস্য-সদস্যা বাছাই নিয়ে আনসার কর্মকর্তাদের সাথে জোনাকীর দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ২৬ জন ভাতাভুক্ত সদস্য-সদস্যা জোনাকীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। বিষয়টি জানতে পেরে জোৎস্না বেগম জোনাকী হবিগঞ্জ সদর উপজেলার অফিস কক্ষে এসে ভাতাভুক্ত সদস্য ইলিয়াস আলীর হামলা চালান। তার হাতে কামড় দিয়ে রক্তাক্ত করেন। ইলিয়াস আলীও পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা চালান। এ সময় হবিগঞ্জ সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা খালেদ আহমদ, উপজেলা প্রশিক্ষক মো. তানিজন আহমেদ, উপজেলা প্রশিক্ষিকা আকলিমা আক্তার বিউটি, ভিডিপি সদস্য শরিফ আহমদ বকুল, ৯নং ওয়ার্ড দলনেতা আলী নেওয়াজ উপস্থিত ছিলেন।
আর্থিক লেনদেনসহ নিজেদের মধ্যে মারামারি করে ইউনিয়ন দলনেতা ইলিয়াস আলীকে রক্তাক্ত করার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কর্তৃক সম্মানীভাতা ভিত্তিক ইউনিয়ন-ওয়ার্ড (পৌর) দলনেতা-দলনেত্রী (স্বেচ্ছাসেবী) নিয়োগ ও অব্যাহতি নীতিমালা-২০২৪ এর পরিশিষ্ট- 'গ' এর ক্রমিক নং-১৩ অনুযায়ী ওয়ার্ড দলনেত্রী পদ থেকে বহিস্কার করা হয়।
জেলা কমান্ড্যান্ট জানান, জোনাকী তার পদ থেকে বহিস্কার হওয়ার পর বিভিন্নভাবে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ নিয়ে সময়ে অসময়ে কার্যালয়ে উপস্থিত হন। তার সদস্যরা নির্বাচনের ভাতা পায়নি বলে অভিযোগ করেন। তার লোকজন যারা ভাতা পায়নি তাদেরকে উপস্থিত করতে বললে তাদের একজনকেও হাজির করতে পারেনি। সে কতগুলো মোবাইল নম্বর নিয়ে আসে। পরে জোনাকী সরকারি মোবাইল নম্বরে হোয়াটসঅ্যাপে ২১ জনের টাকা পায়নি বলে জানায় ও ভাতা না পেলে তাদেরকে নিয়ে মানববন্ধন করবে বলে হুমকি দেয়।
অন্যদিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা দায়ের করে। বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য এটা তার অত্যন্ত নিকৃষ্টতম পর্যায়ের একটি কৌশল। এ মামলাটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মিথ্যা ও বানোয়াট।
তার এই মিথ্যা মামলার জন্য যারা তাকে ইন্ধন দিয়েছে তারাসহ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।