সারা বাংলা

কুমড়ার ফলন-দামে খুশি ফরিদপুরের চাষিরা

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় মরিচ খেতে সাথী ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করে বাম্পার ফলন হয়েছে। বাড়তি সার ও কীটনাশক ছাড়াই স্বল্প খরচে বিষমুক্ত সবজি মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন করে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকেরা। এতে তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। 

জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে চাষিরা মরিচ খেতের মধ্যেই সাথী ফসল হিসাবে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করেন। কুমড়ার বীজ লাগাতে কোনো প্রকার চাষাবাদ করতে হয় না। বাড়তি সার ও কীটনাশক ছাড়াই বেড়ে উঠে মিষ্টি কুমড়া। ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মাথায় চাষিরা মিষ্টি কুমড়া বাজারজাত করতে পারেন। 

সরেজমিনে কুমড়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, উৎপাদিত কুমড়া স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বিভিন্ন জেলাতেও পাঠানো হচ্ছে। এসময় এক কৃষকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রতি হেক্টর জমিতে সবমিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ৪০ হাজার টাকা, আর কুমড়া বিক্রয় হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। 

মধুখালী বাজারে আসা চর বাসপুর গ্রামের চাষি মো. জয়নাল জানান, এক একর জমিতে কুমড়ার চাষ করেছি। ছোট থাকতেই বাজারে নিয়ে এসেছি। প্রতি পিস কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করছি। 

এসময় আরও একাধিক চাষি জানান, প্রতি হেক্টর জমিতে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা। আর কুমড়া বিক্রয় হয় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। এখন কুমড়া বাজারজাতকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভালো দাম পাওয়ায় বেশ খুশি তারা।

ব্যবসায়ী মো. চয়ন শেখ জানান, আমাদের এলাকার মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখান থেকে মিষ্টি কুমড়া সাতক্ষীরা, মাগুরা, মানিকগঞ্জ, যশোর, খুলনা, ঢাকা, গোপালগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় চলে যায়। 

মধুখালী বাজারের কুমড়া আরতের ব্যবসায়ী মো. আলম শেখ জানান, এ বছর ফলন কম হওয়ায় কুমড়ার আমদানি কিছুটা কম। আমরা প্রতিকেজি কাঁচা কুমড়া ১০ থেকে ১২ টাকা এবং পাকা কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় ক্রয় করছি। এছাড়াও কুমড়া ভেদে প্রতিটি চুকতা বা লট ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুব ইলাহী বলেন, “উপজেলায় এ বছর ২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে কুমড়ার চাষ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯১৫ হেক্টর। আর ফলন ধরা হয়েছিলো ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। এ অঞ্চলের মাটি মিষ্টি কুমড়া চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে চাষ।”