চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়ায় লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। জেলার প্রতিটি উপজেলার পেঁয়াজ চাষিরা আগাম জাতের শীতকালীন মুড়িকাটা বা মুলকাটা পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর পেঁয়াজের বীজের দাম বেশী হওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বর্তমান বাজার মূল্য থাকলে লাভের আশা করছেন কৃষকরা।
কুষ্টিয়ায় চলতি মৌসুমে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। যার সিংহভাগই চাষ হয়েছে সীমান্তবর্তী দৌলতপুর উপজেলায়। দৌলতপুরে মুড়িকাটা বা মুলকাটা পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে চাষ হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে।
পেঁয়াজের চাহিদা ও বর্তমান বাজার মূল্য দেখে দৌলতপুরের কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দৌলতপুর কৃষি অফিসার মো. নুরুল ইসলাম।
দৌলতপুর উপজেলার স্বরুপপুর গ্রামের কৃষক মো. নিজাম উদ্দিন ও সাদীপুর গ্রামের কৃষক মামুন হোসেন জানান, এ বছরও পেঁয়াজের বীজের দাম বেশী হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকদের খরচ হচ্ছে ৮০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা বা তারও বেশী। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা বিঘা প্রতি পেঁয়াজের ফলন আশা করছেন ৬০ মণ থেকে ৭০ মণ। কোনো ক্ষেত্রে আরো বেশী। বর্তমান বাজার মূল্য থাকলে চাষিদের লাভ হবে উৎপাদন খরচের প্রায় দ্বিগুণ।
এদিকে এবছর অতি বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের পচন রোগ দেখা দিয়েছে। তাই ভাইরাস দমনে বিষ প্রয়োগ করতে হচ্ছে। ফলে বাড়ছে উৎপাদন খরচ বলেও জানান কেউ কেউ।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুফী মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান বলেন, “পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় প্রণোদনা প্রদান এবং প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে পেঁয়াজ চাষে কৃষকরা লাভবান হবেন।”
দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরই কৃষকরা পেঁয়াজ খেত থেকে উত্তোলন শুরু করবে। উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হলে পেঁয়াজ চাষে আরও অনেকে আগ্রহী হবেন বলে মনে করছেন কৃষকেরা।