দীর্ঘদিন ধরে ঊর্ধ্বমুখী সবজির বাজার। ক্রেতাদের চোখে- মুখে অস্বস্তির ছাপ। তাই, পটুয়াখালীতে নিম্নবিত্ত মানুষদের স্বস্তি দিতে প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি ক্রেতাদের কাছে ন্যায্যমূল্যে বিক্রির জন্য স্থাপন করা হয়েছে ‘কৃষক বাজার’।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আমরা কালাপাড়াবাসী’র সহায়তায় প্রেস ক্লাব সংলগ্ন ভলিবল খেলার মাঠে ‘কৃষক বাজার’ বসানো হয়েছে।
ভোর থেকেই বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হন এ বাজারে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষক বাজার। ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি ও কিনতে পেরে উচ্ছ্বসিত ক্রেতা-বিক্রেতারা। এ বাজার স্থাপন করায় আয়োজকদের সাধুবাদ জানিয়েছেন সবাই।
পটুয়াখালীর বিভিন্ন বাজারে এক পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কৃষক বাজারে সেই লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। শুধু লাউ নয়, কৃষক বাজারে অন্তত ২০ ধরনের সবজি অন্যান্য বাজারের চেয়ে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। এখানে প্রতি আঁটি লাল শাক ২০ টাকা ও লাউ শাক ২০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা ও বরবটি ৫০ টাকা এবং চার পিস মুলা ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে৷
নীলগঞ্জের কুমিরমারা গ্রাম থেকে আসা কৃষক সুলতান মিয়া বলেছেন, ‘‘নিজের উৎপাদিত কিছু সবজি খুব ভোরে এই বাজারে এনেছি। মধ্যস্বত্বভোগী এবং খাজনা ছাড়াই সেগুলো অল্প সময়ে বিক্রি করেছি। একটু কম দামে বিক্রি করেছি। তারপরও পাইকারি দরের চেয়ে ভালো লাভ পেয়েছি। যারা এ বাজার বসিয়েছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ।’’
কলাপাড়া পৌর শহরের এতিমখানা থেকে আসা ক্রেতা সোবাহান হোসেন বলেন, ‘‘গতকাল এক আঁটি লাল শাক ৩০ টাকায় কিনেছি। আজ দুই আঁটি ৩০ টাকায় কিনলাম। বড় বাজারের চেয়ে এই বাজারে সব সবজির দামই কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কম। বাজারটা যাতে দীর্ঘদিন টিকে থাকে, এজন্য আয়োজকদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। যারা ন্যায্যমূল্যের বাজার আয়োজন করেছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’
‘আমরা কলাপাড়াবাসী’র সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সবজি। তাই, আমরা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এখানে নিম্নবিত্তদের স্বস্তির বাজার বসিয়েছি। আজ প্রথম দিনেই হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে উঠেছে বাজারটি।’’
কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেছেন, ‘‘মধ্যস্বত্বভোগী ও খাজনা না থাকায় কম দামে সবজি বিক্রি করতে পারছেন বিক্রেতারা। ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের স্বস্তি দিতেই এই বাজার বসানো হয়েছে। আশা করছি, বাজারটি দীর্ঘদিন স্থায়ী হবে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।’’