সারা বাংলা

অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে বিপদ আছে: এ্যানি 

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। কোনোভাবেই এ সরকারকে ফেল করতে দেওয়া যাবে না। এ সরকার ফেল করলে আমার-আপনার বিপদ আছে। এ বিপদ থেকে বের হতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’’ 

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমজিটিএ) লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার তৃতীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘‘যিনি (শেখ হাসিনা) পালিয়ে গেছেন, তিনি তো রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য ছিলেন। তার সম্মানটা তো তিনি নিতে পারেননি। তিনি গণশত্রু ও জনশত্রুতে পরিণত হয়েছেন। কারণ, তিনি বেগম খালেদা জিয়া ও প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মান দিতে পারেননি। তিনি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে সাজা দিয়েছেন, যার কারণে তিনি বাধ্য হয়ে এ দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য হয়ে তিনি তার পিতাকে সম্মান দিতে পারেননি। দলকে সম্মান দিতে পারেননি। বাংলাদেশের মানুষকেও সম্মান দিতে পারেননি বলেই তিনি গণশত্রুতে পরিণত হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘এখন দেশে দ্বিতীয় বিপ্লব, দ্বিতীয় স্বাধীনতা। ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষা, নতুন ভবিষ্যৎ ও নতুন বাংলাদেশ দেখতে পাচ্ছি। নতুন বাংলাদেশের কারিগর হলেন এই শিক্ষক ও ছাত্ররা। আমরা সবাই নতুন বাংলাদেশ গঠনে উঠেপড়ে লেগেছি। এটি আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। আন্দোলনে-সংগ্রামে শহিদদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। ১৫ বছর চেষ্টা করে আমরা আন্দোলন থেকে বের হতে পারিনি। ছাত্ররা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে একত্রিত হয়েছেন। তাদেরকে নিয়েই আমরা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’’ 

বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা আরও বলেন, ‘‘সংস্কার শেষে নির্বাচন হবে। জনপ্রতিনিধদের ছাড়া ডিসি সাহেবরা বিপদে পড়ে যাবেন। হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের ভীতকে শক্তিশালী করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করাও সংগ্রাম। যত দিন পর্যন্ত আমরা তা নিশ্চিত করতে পারব না, তত দিন আমরা দুর্বল জাতি থাকব।’’ 

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজিব কুমার সরকার। আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সম্রাট খীসা। 

বিএমজিটিএর লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হারুন অর রশিদ। বিশেষ আলোচক ছিলেন মহাসচিব ফিরোজ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, লক্ষ্মীপুর আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ এ কে এম আব্দুল্লাহ ও ভবানীগঞ্জ কারামতিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইব্রাহিম শামীম প্রমুখ।  

সম্মেলেন অতিথিদের কাছে বিএমজিটিএর নেতারা নয়টি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো—মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা। শূন্য পদে ইনডেক্সধারী সকল শিক্ষকের বদলির ব্যবস্থা চালু করা। সহকারী শিক্ষকদের অষ্টম গ্রেড দ্রুত বাস্তবায়ন করা। সরকারি নিয়মে বাড়িভাড়া, উৎসব ভাতা ও চিকিৎসা ভাতা দেওয়া। ১৬ বছরে প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি এবং সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে জেনারেল শিক্ষকদের সুযোগ দেওয়া। ইএফটির মাধ্যমে বেতন দেওয়া। মাদরাসার সকল স্তরের শিক্ষকদের জন্য স্তর এবং পদমর্যাদা অনুযায়ী সরকারি নিয়ম গৃহঋণ পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা। চাকরিকাল শেষ হওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের অর্থ প্রদান নিশ্চিত করা। মাদরাসার প্রশাসনিক অন্তত একটি পদে জেনালে শিক্ষকদের সুযোগ দেওয়া।