সারা বাংলা

সুন্দরবনের প্রাণী প্রবন্ধে ঠাঁই পায়নি ‘বানর’

বঙ্গোপসাগরের পাদদেশে ছয় হাজার বর্গকিলোমিটার পরিধির সুন্দরবনের উল্লেখযোগ্য প্রাণী বানর। বনের কেওড়া, বাইন ও সুন্দরী গাছের ডালে ডালে এ প্রজাতির বসবাস। হরিণের সাথে তাদের অকৃত্রিম বন্ধুত্ব প্রকৃতি সৃষ্টির পর থেকে। যেকোনো পর্যটককে তা সহজেই আকর্ষণ করে। বানর প্রজাতিকে বাদ দিয়ে রচিত হয়েছে ‘সুন্দরবনের প্রাণী’ নামের প্রবন্ধ। এটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে পঞ্চম শ্রেণির আমার বাংলা বই নামের পাঠ্যপুস্তকে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এর প্রকাশক। 

পাঠ্যপুস্তকটির প্রথম মুদ্রণ ২০১২ সালের আগস্টে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় মুদ্রণ যথাক্রমে ২০১৫ সালে ২০২৩ সালের আগস্টে। হায়াত মাসুদ, মুহাম্মদ দানীউল হক ও ড. মাসুদুজ্জামান পুস্তকটি রচনা ও সম্পাদনা করেন। গত এক যুগে পঞ্চম শ্রেণিতে সারাদেশে প্রায় ৮০ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেছে। শিক্ষার্থীরা সুন্দরবনের প্রাণীর মধ্যে বানর প্রজাতি সম্পর্কে নূন্যতম ধারণা পাইনি।

পাঠ্যপুস্তকে আলোচিত প্রবন্ধে বাঘ, হরিণ, বুনোশুকর ও শকুনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চব্বিশ লাইনের এ প্রবন্ধে বানরের কথা উল্লেখ নেই। বনে বসবাসকারী প্রাণীর মধ্যে সংখ্যা হিসেবে বানরের অবস্থান দ্বিতীয়। 

পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ফরহাদুল ইসলাম প্রসঙ্গ কথা শিরোনামে মুখবন্ধ লিখেছেন। এতে তিনি পাঠ্যপুস্তকটি রচনা, সম্পাদনা, যৌক্তিক মূল্যায়ন, পরিমার্জন এবং মুদ্রণ ও প্রকাশনার সাথে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের যত্ন, প্রয়াস ও সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও পাঠ্যপুস্তকটিতে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে পাঠ্যপুস্তকটির অধিকতর উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি সাধনের জন্য যেকোনো গঠনমূলক ও যুক্তিসঙ্গত পরামর্শ গুরুত্বের সাথে বিবেচিত হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। 

এ প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপকালে খুলনাস্থ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (পশ্চিম) মো. সারওয়ার আলম বলেন, “এমন প্রবন্ধে সুন্দরবন সম্পর্কে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্ধকারে থেকে যাবে। সুন্দরবনে প্রাণীর মধ্যে বানর ও বন্য শুকরের সংখ্যায় বেশি।”

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, “হরিণের সঙ্গে বানরের বন্ধুত্ব প্রকৃতি সৃষ্টির পর থেকে। সুন্দরবনে বাঘের পদচারণ বানর সাথে সাথে বুঝতে পারে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় বাঘের আগমন দেখলেই কু কু আওয়াজ করে হরিণকে সাবধান করে দেয়। হরিণ প্রাণ বাঁচাতে ছুটে পালিয়ে স্থান ত্যাগ করে।”