পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত জেলা চাঁদপুর। আলুসহ বিভিন্ন সফল উৎপাদনে এই জেলার সুনাম রয়েছে। এ বছর আলু আবাদের সময় বৃষ্টি হওয়ায় নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম হওয়ার পর খেতে বীজ রোপণ করেন চাষিরা।
এছাড়া, কুয়াশার কারণে জমিতে ছত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দেওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, দেশে আলু উৎপাদনে চাঁদপুর শীর্ষ পাঁচটি জেলার মধ্যে একটি। জেলায় এ বছর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৯০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে। এই জেলায় সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয় চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নিজগাছতলা গ্রামের কৃষক কামাল ঢালী বলেন, “বৃষ্টির কারণে এ বছর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে দেরিতে। এরপর এখন কুয়াশার কারণে আলু গাছের পাতায় রোগ দেখা দিয়েছে। পাতা সাদা হয়ে ধীরে ধীরে গাছ নুয়ে পড়ছে। কীটনাশক ব্যবহার করেও লাভ হচ্ছে না।”
আলু গাছে একই ধরনের রোগের কথা জানান সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের চাঁদখার দোকান এলাকার কৃষক করিম মাতব্বর। তিনি জানান, এবছর কুয়াশার কারণে আলু গাছগুলো বড় হচ্ছে কম। আলুর ভালো ফলন পাওয়া নিয়ে এই কৃষক শঙ্কায় রয়েছেন। দেরিতে আলু উত্তোলন করলে দাম কম মিলবে বলেও জানান তিনি।
চাঁদপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান রুপম বলেন, “জেলার ১৩টি হিমাগারে ৮২ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণ করা যাবে। আমাদের কয়েকটি মডেল ঘর আছে। সেখানেও কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন।”
চাঁদপুর সদরের কৃষি কর্মকর্তা তপন রায় বলেন, “আমরা ছত্রাক দমনে প্রয়োজনীয় ওষুধ ছিটানোসহ কিটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি চাষিদের। কৃষকদের হতাশ হওয়ার কারণ নেই। তাদের যেকোনো পরামর্শ সহায়তায় আমাদের মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কর্মকর্তারা কাজ করছেন।”
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সাইফুল হাসান আল-আমিন বলেন, “এবার অতি বৃষ্টির কারণে সঠিক সময়ে কৃষকরা জমিতে আলু রোপণ করতে পারেননি। তাই এখনো আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। কৃষকদেরকে মাঠ পর্যায়ে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলন আশা করছি।”