সারা বাংলা

চট্টগ্রামে আইনজীবীকে হত্যা: রাতভর যৌথ অভিযানে আটক ২৭

চট্টগ্রামে সাবেক ইসকন নেতা ও সনাতন সম্মিলিত জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুরের পর আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবীকে হত্যার ঘটনায় রাতভর অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) গভীর রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত নগরীর কোতোয়ালী থানার বিভিন্ন এলাকায় যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে। 

পুলিশ জানায়, চিন্ময় অনুসারীদের হামলায় মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলীফ নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরনে মঙ্গলবার রাত থেকেই নগরীর বিভিন্ন এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে। নগরীর কোতোয়ালী থানার পাথরঘাটা, মেথর পট্টি, আন্দরকিল্লা, হাজারী গলি ও আশেপাশে এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ও যাছাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার রইছ উদ্দিন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি বলেন, যৌথ বাহিনীর অভিযানে ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই চলছে।

এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার প্রতিবাদে ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বুধবার সকাল থেকে নগরের নিউমার্কেট মোড় ও আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করেছেন ছাত্র-জনতা ও আইনজীবীরা।

এছাড়াও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করছেন আইনজীবীরা। নিহত সাইফুল ইসলাম আলীফ সহকারি কৌঁসুলি (এপিপি) হিসেবে চট্টগ্রাম আদালতে দায়িত্বরত ছিলেন।

এর আগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সোমবার ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে মহানগর আদালতে তার জামিনের শুনানির সময় নির্ধারিত ছিল।

সকাল থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে শত শত হিন্দু ধর্মাবলম্বী জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে শুরু করে। পাশাপাশি আদালত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশের পর আদালত চত্বরেই চিন্ময় দাসকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানটি ঘিরে ধরে বিক্ষুব্ধরা।

এক পর্যায়ে প্রিজন ভ্যান থেকেই চিন্ময় দাস পুলিশের সরবরাহ করা হ্যান্ডমাইকে অনুসারীদের শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করার আহ্বান জানান। বেলা ৩টা নাগাদ ওই সংঘর্ষ চলাকালে আদালত এলাকার প্রবেশমুখে রঙ্গম টাওয়ার এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত রাষ্ট্রপক্ষের এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করে। আইনজীবী নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়।