গাজীপুরে গত ৮ মাসে বিভিন্ন বয়সের ৫১৪ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন। জাতীয় আইনি সহায়তা এবং মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) গাজীপুর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবনিমিয়কালে এ সব তথ্য উপস্থাপন করেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গাজীপুর শহরের মধ্য ছায়াবিথী এলাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্র অফিসের সভাকক্ষে মতবিনিমিয় সভায় নারীর প্রতি সহিংসতা, অগ্নি প্রকল্পের কার্যক্রম ও অর্জন বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন আসকের গাজীপুরের জেলা ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান আমান।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সিএসও সদস্যদের তথ্যানুযায়ী, ০ থেকে ১০ বছর বয়সের ১৫ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সের ৮১ জন, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের ৭৯ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের ৮৪ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের ৫৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের ২০১ জন এবং ৬১ বছর উপরে ১৫ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
৫১৪ জন ভুক্তভোগী নারীর মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল ৩৪৪ জনের। এর মধ্যে আইনি সেবায় ১৪৫ জন, চিকিৎসা সেবায় ২৯ জন এবং মনস্তাত্ত্বিক পরামর্শের প্রয়োজন ছিল ১৬১ জনের।
গণমাধ্যমের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আট মাসে ধর্ষণ ও সঙ্গবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৬ জন, ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৪ জন, ধর্ষণের পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ৫ জন, বিভিন্নভাবে হত্যার শিকার ১৭ জন, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে ১২ জনের, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ১২ জন এবং শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেন ৩ জন নারী।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। নারীর প্রতি সংহিসতা প্রতিরোধে এবং সংবাদপত্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা, সাংবাদিকদের বিশ্লেষণধর্মী ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে সংবাদ পরিশেনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা হয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের গাজীপুরের জেলা ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান আমান বলেন, গাজীপুরের ৫টি উপজেলার ৩৯টি ইউনিয়নে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের অগ্নি প্রকল্প। চলতি বছরের মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৮ মাস গাজীপুরে বিভিন্ন বয়সের ৫১৪ জন নারীর সঙ্গে (ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, সালিশ, পারিবারিক নির্যাতন ও ফতোয়া) সহিংসতা হয়েছে।