সারা বাংলা

‘নানাভাবে পাহাড়ি মানুষ অধিকার বঞ্চিত হয়েছে’

“শেখ হাসিনার সরকার ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকলেও তারা পার্বত্য শান্তি চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করেনি। বরং জনসংহতি সমিতির নেতাদের বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। বান্দরবানে জনসংহতি সমিতির নেতাকর্মীদের মিছিল-মিটিং এমনকি শান্তি চুক্তি দিবস উদযাপন করতে দেওয়া হয়নি। নানাভাবে পাহাড়ি মানুষদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।”

আরো পড়ুন: শান্তি চুক্তির ২৭ বছর, বাস্তবায়ন হয়নি সব ধারা

সোমবার (২ ডিসেম্বর) বান্দরবান রাজার মাঠে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২৭ বছর বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত গণসমাবেশ ও আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) এ সভার আয়োজন করে।

বক্তারা বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ে শান্তি-স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হচ্ছে। ভূমি কমিশন কার্যকর না হওয়ায় ভূমি জটিলতা দিন দিন বাড়ছে। পার্বত্য চুক্তি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না করলে পাহাড়ে শান্তি ফিরে আসবে না। পাহাড়ে শান্তি ফেরাতে শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে। 

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুমন মারমা। বক্তব্য রাখেন- পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কেন্দ্রীয় নেতা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএসমং মার্মা, সাধুরাম ত্রিপুরা, মেঞোচিং মার্মা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রেজা নিউটন ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনে বান্দরবান জেলার সভাপতি উলিসিং মার্মা প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে রাজার মাঠ থেকে শোভাযাত্রা বের হয়।

এদিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সরকারের পক্ষে পায়রা উড়িয়ে চুক্তির বর্ষপূর্তি পালন করে পার্বত্য বান্দরবান জেলা পরিষদ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবান ৬৯ পদাতিক ডিভিশনের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মেহেদী হাসান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম বিল্লাহ।

শান্তি চুক্তির বিভিন্ন ধারা সংস্কারের দাবিতে বাঙালিদের সংগঠন পার্বত্য নাগরিক পরিষদ মুক্ত মঞ্চে ও চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবিতে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দল বালাঘাটায় সমাবেশ করে।

প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর একটি রাজনৈতিক সংগঠন। আদিবাসীদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৮০ এবং ৯০ দশকে পাহাড়ে সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনা করেছিল তারা। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দীর্ঘ আলোচনা শেষে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শান্তি চুক্তি সই হয়।