নারায়ণগঞ্জ বন্দরে কৃষি জমির সেচ প্রকল্পে চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে গণপিটুনি দিয়ে পানিতে চুবিয়েছে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী। দুই নেতা হলেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তারা মিয়া ও ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার পিচকামতাল গ্রামের জহিদ্দার বিলে এ ঘটনা ঘটে। আহত সেচ প্রকল্পের মালিক আহাদ আলী বাদী হয়ে বিএনপিনেতা তারা মিয়াসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউপির বাজুরবাগ এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে আমান উল্ল্যাহ দীর্ঘদিন ধরে জহিদ্দার বিলে ইরি ধান জমিতে পানি সেচ করে আসছিল। তারপর থেকে বালিগাঁও গ্রামের হযরত আলী মিয়ার ছেলে যুবদলনেতা পরিচয়দানকারী পাপ্পু ও পিচকামতাল গ্রামের মৃত সায়েদ আলী মিয়ার ছেলে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির ‘বিতর্কিত’ সভাপতি তারা মিয়াসহ ১০-১২ জন আমান উল্লাহর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেচকাজের আমান উল্লাহর কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। এ সময় আমান উল্লাহ অপারগতা প্রকাশ করলে পাপ্পু, বিএনপিনেতা তারা মিয়া, জাহিদ ফারুকসহ ২০-২৫ জন আমান উল্লাহর ওপর হামলা করেন।
আমান উল্লাহ প্রাণ বাঁচাতে ডাক-চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসে। ‘চাঁদাবাজির’ তথ্য ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে কয়েক শ গ্রামবাসী জড়ো হয়ে তাদের গণপিটুনি দেয়।
হামলায় আহতরা হলেন- সেচ প্রকল্পের মালিক আমান উল্ল্যাহ (৪০) ও তার স্ত্রী মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার লাভলী বেগম (৩৬), ছেলে সোহান (২১), আহাদ আলী (৫৫) ও ছেলে বাহাউদ্দীন (৩৫)। আহতদের উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পুলিশ ও স্থানীয়রা।
অপরপক্ষের দাবি, ফসলি জমি কাটতে বাধা দেওয়ায় এই হামলা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ বন্দর থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তারা মিয়া গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত মুছাপুর ইউনিয়নের জহিদ্দা বিলের ফসলি জমি মাটি কেটে বিক্রি করে আসছে বাজুরবাগ এলাকার মৃত তমিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে আমান উল্ল্যাহ; বালিগাঁও এলাকার আদম আলী মিয়ার ছেলে আহাদ আলী ও বাঙ্গালবাড়ী এলাকার তমিজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে বাহাউদ্দীন। রবিবার সকালে আমার জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ার সময় বাধা দিলে ‘ভূমিদস্যুরা’ আমাকে হত্যার জন্য গুলি করে। আমি প্রাণ বাঁচাতে পুকুরে লাফ দিই। হামলায় আমি ও পাপ্পুসহ ৪-৫ জন আহত হই।
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘সেচ প্রকল্প নিয়ে চাঁদা দাবি ও মারামারির ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ দুইটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’