সারা বাংলা

প্রেমের টানে সিরাজগঞ্জে চীনা যুবক

প্রেমের টানে চেংনাং নামে এক চীনা নাগরিক বর্তমানে সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে বিয়ারা গ্রামে শশুরবাড়িতে অবস্থান করছেন। তিনি এই গ্রামের অন্তরা খাতুন (২৭) নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেছেন। তিনি গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।

জানা যায়, গার্মেন্টসের বায়ারের কাজে বন্ধুদের সঙ্গে চীন থেকে বাংলাদেশের গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় আসেন চেংনাং। কাজের সুবাদে অন্তরার সঙ্গে দেখা হয়। এরপর দু-জনের মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে গত (২২ নভেম্বর) নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে চেংনাং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে অন্তরাকে বিয়ে করেন। চেংনাং এর নাম রাখা হয়েছে সালমান স্বাধীন। বর্তমানে দুজন কাজিপুরের পৌর এলাকার বিয়ারা গ্রামে অন্তরার বাবা আব্দুর রশিদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। ভিসা প্রসেসিং শেষে স্বামী-স্ত্রী দুজনে চীনের হুনান শহরে চলে যাবেন। দুইদিন আগে নব-দম্পতি গ্রামে আসলে অন্তরার স্বজনসহ দূর-দূরান্তের মানুষ এসে বিদেশি জামাইকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমাচ্ছেন।

অন্তরা বলেন, “গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করা অবস্থায় চীন থেকে কিছু বিদেশি বায়ারের সঙ্গে কারখানায় আসেন চেংনাং। তখন আমাকে দেখে চেংনাংয়ের ভালো লাগে। এরপর দুজনের ফেসবুকে কথাবার্তা এবং মন দেওয়া-নেওয়া হয়। তিন মাস প্রেমের পর পরিবারের সম্মতিতে দুজনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “গত ৫ মাস আগে তার পূর্বের স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়েছে। ৯ বছর বয়সী একটি মেয়েও রয়েছে তার। তবে এসব বিষয় খুব সহজভাবেই চেংনাং মেনে নিয়েছেন।”

চেং নাং বলেন, “অন্তরাকে প্রথম দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগে। একপর্যায়ে অন্তরার ফেসবুক আইডিতে মেসেজ পাঠাই। সেই থেকে আমাদের সম্পর্কের শুরু। এরপর প্রেম এবং বিয়ে। অন্তরার অতীত নিয়ে আমার কোনো ভাবনা নেই। এখন দু-জন সারাজীবন একসঙ্গে থাকবো এটাই আমাদের পরিকল্পনা। এরমধ্যে ভিসার আবেদন করেছি। ভিসা পেলেই দু-জন চীনে চলে যাবো।”

অন্তরার মা বলেন, “মেয়ে করবে সংসার, ভাগ্যে ছিল হয়ে গেছে। আমি দোয়া করি তারা সুখে সংসার করুক।”

প্রতিবেশী আমিনুল ইসলাম বলেন, “এটাই প্রথম আমাদের কাজিপুরে। গত দুদিন ধরে কাজিপুরে চীনা যুবক তার শ্বশুড়বাড়িতে এসেছে। তাদের একনজর দেখতে লোকজন ভিড় করছে।”

অন্তরার বাবা আব্দুর রশিদ বলেন, “প্রথমে একটু চিন্তা হয়েছিল। ভিনদেশি একজনের সঙ্গে আমাদের মেয়ে কিভাবে সংসার করবে। তবে ধীরে ধীরে একে অপরকে জানতে ও বুঝতে শিখেছে। তাদের মধ্যে একটি সুন্দর বন্ধনের সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য আমরাও তাকে মেয়ের জামাতা হিসেবে মেনে নিয়েছি। অভিভাবক হিসেবে আমরা খুশি। দোয়া করি তারা যেন সারাজীবন সুখে থাকে।”