সারা বাংলা

বাংলাদেশকে আর নতজানু অবস্থায় পাওয়া যাবে না: সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘‘ভারত আমাদের প্রতিবেশী। বাস্তব সত্য হল, প্রতিবেশী বদলানো যায় না। আমরা সব সময় বলেছি, ভারতসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক থাকবে। কিন্তু সেই সুসম্পর্ক হতে হবে পারস্পরিক মর্যাদা রক্ষা করে ও ন্যায্যতার উপর ভিত্তি করে। বলা হত, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিন্তু সেটা আসলে বন্ধুত্বের ছিল না। একটা দল তার গদি রক্ষার জন্য দেশের স্বার্থকে বিকিয়ে দিয়ে সেটা নিশ্চিত করেছে। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থান জনগণের রায় হল, বাংলাদেশকে আর ওই নতজানু অবস্থায় আর পাওয়া যাবে না।’’ 

তিনি বলেন, ‘‘সারা বিশ্বকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশ আর নতজানু থাকবে না। বাংলাদেশ তার মর্যাদা ও জাতীয় স্বার্থের ভিতর ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে অপরাপর দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলবে। নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সঙ্গেও আমরা ওই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে সুসম্পর্ক করতে চাই।’’ 

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাতে তিনি এসব কথা বলেন।

সাকি বলেন, ‘‘আমরা দেখছি ভারতীয় মিডিয়ার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিজেপি দলীয় স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন করার তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা প্রচার করতে চাইছে, বাংলাদেশে নারীরা, সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীন। এগুলো সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা সত্য দিয়েই লড়াই করছি। সারাদেশসহ বিশ্বের মানুষ দেখছে বাংলাদেশে এরকম কোনো পরিস্থিতি নেই। সবচেয়ে বড় কথা, বাংলাদেশ মাথা নত করছে না, কাবু হয়ে যাচ্ছে না। ভারতকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, তারা ধীরে ধীরে আলোচনার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। কূটনৈতিক সম্পর্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।  আমাদের দিক থেকে এই তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে। এইখানে ন্যায্যতা ও মর্যাদার ভিত্তিতে ওইখানে আর নতজানু থাকবে না বাংলাদেশ।’’ 

ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘সত্য দিয়ে আমাদের লড়াই করতে হবে। সেখানে দেশের ভেতর ও বাইরে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদের সম্পৃক্ত করতে হবে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে দেশের গণমাধ্যমকে সত্য তুলে ধরতে হবে। অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে লড়াই করতে হবে। 

‘‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যে গণহত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, সেটির বিচার আমরা দাবি করেছি। একই সঙ্গে ২০২৪ সালে এসে ক্ষমতা রক্ষার জন্য ফ্যাসিস্ট শাসক নিরীহ মানুষদের হত্যা করেছে। সেখানে যেভাবে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে, সেটার বিচার হতে হবে। ন্যায় বিচারই হবে নতুন বাংলাদেশ যাত্রার সবচেয়ে শক্তিশালী দিক। সেখানে কিছুটা ত্রুটিবিচ্যুতি হচ্ছে। যেভাবে মামলা হচ্ছে, সেগুলো অনেকটা পুরনো কায়দায় হচ্ছে। যার কারণে ওই মামলাগুলোর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। ২৪-এর আত্মত্যাগ ও সংগ্রাম যেন বেহাত না হয়, মানুষের আকাঙ্ক্ষার যেন বাস্তবায়ন হয়, সে লক্ষে আমাদের কাজ করতে হবে।’’