সারা বাংলা

নোয়াখালীতে ভাবিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা  

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় গৃহবধূকে সড়কে আটকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছেন দূর সম্পর্কের দেবর। ওই সময় গৃহবধূর সঙ্গে থাকা শ্বশুর রেজাউল হককেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করা হয়।

নিহত শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩০) উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার নোয়াবাড়ির কুয়েত প্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। তিনি দুই সন্তানের জননী।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে তাকে হত্যা করা হয়। 

অভিযুক্ত দেবর সাইফুল ইসলাম খালেদ (৩০) একই বাড়ির লিটনের ছেলে।

নিহতের বড় বোন ফারজানা আক্তার সুমি বলেন, পারিবারিকভাবে ১৬ বছর আগে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। অভিযুক্ত খালেদ পিংকির দূর সম্পর্কের চাচাত দেবর এবং একই বাড়ির বাসিন্দা। বছর খানেক আগে পিংকির ব্যবহৃত মোবাইল নষ্ট হয়ে যায়। স্বামী প্রবাসে থাকায় তার বড় ছেলের মাধ্যমে সেটি বাজার থেকে ঠিক করে আনতে দেয় খালেদকে। ওই সময় খালেদ মোবাইল থেকে পিংকির স্বামীকে পাঠানো ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও নিজের মুঠোফোনে নিয়ে নেয়। এরপর ওই ছবি ও ভিডিও দিয়ে পিংকিকে ব্ল্যাকমেইল করে ধাপে ধাপে সাত লাখ টাকা আদায় করেন। একইসঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা চালান কিন্তু ব্যর্থ হন। এরপর খালেদ আরও টাকা দাবি করেন। 

তিনি আরো জানান, কিছু দিন আগে এ নিয়ে আদালতে মামলা করেন পিংকি। এতে আরো ক্ষিপ্ত হন খালেদ। দুই মাস আগে পিংকির স্বামী দেশে আসলে তার ওপরও হামলা করেন খালেদ। টাকা আদায় ও পরকীয়ায় ব্যর্থ হয়ে পিংকিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। 

নিহতের দুলাভাই বাবর হোসেন বলেন, মঙ্গলবার সকালে স্বামীর বাড়ি থেকে শ্বশুর রেজাউল হকের (৭২) সঙ্গে চৌমুহনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন পিংকি। ওই সময় তারা চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে পৌঁছলে খালেদ তাদের গতিরোধ করেন। সেখানে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে পিংকিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন খালেদ। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। তখন পুত্রবধূকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে শ্বশুর রেজাউল হোসনও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। 

চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবু তালেব বলেন, পিংকিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে নিহতের স্বজনেরা মরদেহ নিয়ে যায়।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, নিহত গৃহবধূর পরিবারের সঙ্গে খালেদের পরিবারের আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। তদন্ত শেষে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।