সারা বাংলা

সংঘর্ষের পর ইজতেমা মাঠে সেনা-বিজিবি মোতায়েন

গাজীপুরের টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠ দখল নিয়ে মাওলানা জুবায়ের ও মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিন জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে, পুলিশ দুজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ভোররাত ৪টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়। নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের বাচ্চু মিয়া (৭০), ঢাকার দক্ষিণখান থানার বেড়াইদ এলাকার বেলাল (৬০) ও বগুড়ার তাইজুল ইসলাম (৬৫)।

তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেছেন, ‘‘নিহতরা সবাই শুরায়ে নেজামের সাথী (জুবায়েরপন্থি)। এ ঘটনায় আমাদের আরো শতাধিক সাথী আহত হয়েছেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বুধবার ভোররাতে সাদপন্থিরা অতর্কিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এখন পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে পেরেছি। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’’

অপরদিকে, ইজতেমা মাঠে এক সংবাদ সম্মেলনে সাদপন্থি মুয়াজ বিন নূর বলেছেন, ‘‘গত রাত ৩টার দিকে তারা (জুবায়েরপন্থিরা) আমাদের সাথীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় সাথীরা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। তখন আমাদের সাথীরা মাঠে ঢুকে পড়ে।’’

এ সময় যেকোনো মূল্যে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে তারা জোড় ইজতেমা করবেন বলে জানান তিনি। সংঘর্ষে সাদপন্থি কেউ মারা গেছেন কি না, জানতে চাইলে মুয়াজ বিন নূর বলেন, ‘‘এখনো আমাদের হাতে হতাহতদের সংখ্যা আসেনি। তবে, আমাদের অনেক সাথী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার থেকে টঙ্গী ইজতেমা মাঠে পাঁচ দিন ইজতেমা করতে চান মাওলানা সাদের অনুসারীরা। মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা তাদের এখানে ইজতেমা করতে দিতে চান না। এ জন্য আগে থেকে ইজতেমা মাঠ দখলে নেন জুবায়ের অনুসারীরা।

এ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে চারদিক থেকে মাঠে প্রবেশ করতে থাকেন সাদের অনুসারীরা। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে মাঠ ছেড়ে দেন জুবায়ের অনুসারীরা।

এদিকে, ইজতেমা মাঠে দু’পক্ষের সংঘর্ষের পর টঙ্গীর সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। যেকোনো মুহূর্তে ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন মাঠের আশপাশের বাসিন্দারা।

টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইস্কান্দার হাবিবুর রহমান দুই জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘‘যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইজতেমা মাঠে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।’’

টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, ‘‘আমাদের হাসপাতাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫৬ জনকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অনেককে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে।’’

আরো পড়ুন: ইজতেমা মাঠ দখল নিয়ে মুসল্লিদের দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহত ২