সারা বাংলা

শিক্ষকদের দ্বন্দ্ব, ভুগছে শিক্ষার্থীরা

লক্ষ্মীপুরের একটি বিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকের দ্বন্দ্বে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষকদের গ্রুপিংয়ের কারনে শিক্ষার্থীরাও দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে নেমেছে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভে। অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। তবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ইতিমধ্যে একজন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বালিকা বিদ্যা নিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ ও সহকারী শিক্ষক ফরিদা ইয়াছমিনের দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্যে। এটি প্রকোপ আকার ধারণ করে ফরিদা ইয়াছমিনের সঙ্গে অন্য শিক্ষকদের হাতাহাতিতে গড়ায়। এতে খেসারত দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষকদের কারনে দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীরা মানসিক ভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দুই শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীরা গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রায় দেড় ঘণ্টা পৃথকভাবে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে লক্ষ্মীপুর-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। আটকা পড়ে শতাধিক যানবাহন।

শিক্ষার্থীরা জানান, সহকারী শিক্ষক ফরিদা ইয়াছমিনের কাছে প্রাইভেট না পড়লে নানা অজুহাত দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। একই সঙ্গে সহকর্মী অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে তিনি খারাপ আচরণ করে আসছেন। এতে অনেকেই স্কুলে আসা ছেড়ে দিয়েছে। 

এছাড়াও ফরিদার অসদাচরণের ঘটনায় বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক শাহনাজ আক্তার প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে এবং অভিযোগের ভিত্তিতে ফরিদা ইয়াছমিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিটন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, “শিক্ষক ফরিদা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা প্রায়ই আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এতে শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।”

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াছমিন।

শোনাকের লক্ষ্মীপুর জেলা সভাপতি প্রফেসর জেডএম ফারুকী জানান, বিদ্যালয়টিকে আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। দুই শিক্ষকের দ্বন্দ্বের কারনে শিক্ষার্থীরা ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে। অতি দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এবং বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সম্রাট খীসা জানান, দুই শিক্ষকের দ্বন্দ্বে অভিযোগের ভিত্তিতে ফরিদা ইয়াছমিন নামে এক শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।