সারা বাংলা

নির্বাচনে কারা আসবে, সে সিদ্ধান্ত ইসির: বদিউল আলম

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘‘কারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বা কারা যোগ্য, তা নির্ধারণ করা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দায়িত্ব। সংস্কার কমিশনের কাজ কেবল নির্বাচনি ব্যবস্থার সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া। আর এর মাধ্যমে নির্বাচনি কার্যক্রম উন্নত করাই মূল লক্ষ্য।’’

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারবিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সবাই সুষ্ঠু নির্বাচন চান উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা উপলব্ধি করেছি, মানুষের মধ্যে আগ্রহ, আবেগ ও উচ্ছ্বাস আছে। যেখানে আমাদের দেখে মানুষ দুটো কথা বলতে চায়। মনের আকুতি ব্যক্ত করতে চায়। তারা বিভিন্ন প্রস্তাব দিতে চায়। তাদের সবার আকুতি, একটা সুষ্ঠু–নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। যার মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটা একটা শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়াবে। এটা জনআকাঙ্ক্ষা। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’’

তিনি বলেন, ‘‘আশা করছি যে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, অর্থাৎ ৩১ তারিখের আগেই আমরা আমাদের প্রস্তাবটা দেব। প্রধান উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন, নির্বাচনি ট্রেনটা যেন ট্র্যাকে উঠে। এজন্য প্রথম কাজ ছিল নির্বাচন কমিশন গঠন করা। ওনারা তাই করেছেন।’’ 

বর্তমান নির্বাচন কমিশন পুরোনো আইনে পরিচালিত হলেও সংস্কার কমিশনের সঙ্গে তা সাংঘর্ষিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাজের সঙ্গে তাদের কোনোরকম সাংঘর্ষিক অবস্থান তৈরি করছে না। যাদের নিয়ে অনুসন্ধান কমিটি গঠিত হয়েছে, তারা অত্যন্ত সম্মানিত এবং দলনিরপেক্ষ ব্যক্তি। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, তারা সঠিক ব্যক্তি এবং তারা আমাদের একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে।’’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘নাগরিক হিসেবে অনেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছেন। তারা আর ব্যবহৃত হতে চান না। তারা চান সুষ্ঠু–নিরপেক্ষ নির্বাচন। তাই সেভাবে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করছি। আর হলফনামায় অনেক রকম ভুয়া, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেওয়া হয়। তথ্য গোপন করা হয়। এগুলো যাতে যাচাই-বাছাই করা হয়, সে–সংক্রান্ত প্রস্তাব দেওয়ার কথা বিবেচনা করছি। আমাদের প্রস্তাবগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’’

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের ব্যাপারে সুপারিশ থাকবে। সংখ্যানুপাতিক আসনের পক্ষেও আছে, বিপক্ষেও প্রস্তাব আছে প্রবল। সব কটা বিবেচনায় নিচ্ছি। তবে এখানে আরেকটা জিনিস জানা দরকার, এসব সিদ্ধান্ত মূলত আমাদের নয়। এগুলোর জন্য সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। তো সংবিধান পরিবর্তনের জন্য যে কমিশন হয়েছে, তাদের এ বিষয়ে সুপারিশ করতে হবে।’’

আগামী নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের নির্বাচন সংস্কার কমিশন প্রধান বলেন, ‘‘ইভিএম-এর আর প্রশ্নই আসে না। ওটা হবে না। নির্বাচন কমিশনও বলেছে, আমরাও একই মত দিয়েছি।’’

হলফনামায় তথ্য গোপন প্রসঙ্গে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘‘প্রার্থীদের হলফনামায় অনেক রকম ভুয়া তথ্য থাকে, গোপনও করা হয়। আমরা এ বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়ারও পরিকল্পনা করছি। আমাদের প্রস্তাবনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্কার কমিশনের সদস্য স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আবদুল আলীম ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম প্রমুখ।