কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটককৃতরা হলেন- ইসমাইল হোসেন মজুমদার (৪৩), জামাল উদ্দিন মজুমদার (৫৮), ইলিয়াছ ভূইয়া (৫৮), আবুল কালাম আজাদ (৪৮) ও ইমতিয়াজ আব্দুল্লাহ সাজ্জাদ (১৯)।
গত রবিবার দুপুরে ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছের বাজারে যাওয়ার পর স্থানীয় আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন আব্দুল হাই কানুকে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করে। আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার ওই ঘটনার ভিডিও গত রবিবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটক করতে অভিযান অব্যাহত আছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল বলেন, “ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় পুলিশ আটককৃতদের ৫৪ ধারায় আদালতে হাজির করবে। তারপর নিয়মিত মামলা হবে।”
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, “সরকারের কাছে আমার আহ্বান যেন ন্যায়বিচার পাই। যদি তারা অপরাধীদের শাস্তি না দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে তাদের জবাব দিতে হবে।” আব্দুল হাই বর্তমানে ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন এবং সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে, লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দুই সমর্থককে বহিষ্কার করেছে জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করায় নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেছে দলটি। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায় জামায়াতে ইসলামী কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখা।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখার আমির অ্যাডভোকেট মু. শাহজাহান ও জেলা সেক্রেটারি ড. সরওয়ার উদ্দিন ছিদ্দিকী যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “দেশের বিভিন্ন পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছনার ঘটনা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। আমরা এই দুঃখজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
এর আগে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেছিলেন, “রবিবার দুপুরে ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছের বাজারে গিয়েছিলাম। এ সময় স্থানীয় জামায়াতকর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেন। আমাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেয় তারা।’’