আমন ধান কাটা হয়েছে। মাঠ এখন ফাঁকা। সেই ফাঁকা মাঠে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। ঐতিহ্যের এই প্রতিযোগিতা দেখতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছিল রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিলাসী গ্রামের মাঠে। সাহাপুর গ্রামের কৃষক আজিজুল হক এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন।
এবার অষ্টমবারের মতো আজিজুল হক এ আয়োজন করেন। অর্ধশতাধিক ঘোড়া আটটি গ্রুপে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এবারের প্রতিযোগিতার বিশেষ আকর্ষণ ছিল ৪ মাস বয়সী ঘোড়ার পিঠে সওয়ারী ৩ বছরের আছিয়া খাতুন। সেও ছিল প্রতিযোগী। ঘোড়ার পিঠে চড়ে অংশ নিয়েছে প্রতিযোগিতায়।
আমনের ফাঁকা মাঠে ঘুরে ঘুরে প্রাণপণ ছোটে ঘোড়াগুলো। পিঠে সওয়ারি, থামলেই চাবুকের ঘা। ঘোড়ার গতি আরও বাড়ছিল তখন। মাঠভরা দর্শক তখন দিচ্ছিলেন হাততালি। শুরুতে সবাই সমান গতিতে দৌঁড়ালেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ব্যবধান বাড়ে এক ঘোড়ার সঙ্গে অন্য ঘোড়ার। তিনটি রাউন্ডভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় রাজশাহীর আশপাশের ৬ জেলার ৫৮টি ঘোড়া ও সওয়ারি। রাউন্ডভিত্তিক জয়ীরা অংশ নেয় ফাইনালে। তিনটি রাউন্ডভিত্তিক এবং ফাইনাল দৌড়ে দুজন করে মোট আট ঘোড় সওয়ারি পুরস্কার হিসেবে পান মোবাইল ফোন।
কৃষক আজিজুল হকের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজসেবক আমিনুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন লেখক শেখ সাঈদুর রহমান সাঈদ, সাংবাদিক আবু সালে মো. ফাত্তাহ, ক্রীড়া সংগঠক আলতাফ হোসেন, হাসেম আলী ও কবি শাহাদাত আলম বকুল।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বললেন, ঘৌড়দৌড় উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী খেলা। বিশেষ করে রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ এলাকায় ঘোড়ার দৌড় অনেক জনপ্রিয় খেলা। আগে ছোট পরিসরে ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলেও বর্তমানে বিশাল আয়োজনে প্রতিযোগিতা হচ্ছে। উৎসবে পরিণত হয়েছে ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা।
আয়োজক কৃষক আজিজুল হক বললেন, গ্রামের মানুষকে নির্মল বিনোদন দিতে এ আয়োজন করেন তিনি। যতদিন বাঁচবেন, প্রতিবছরই এমন আয়োজন করার ইচ্ছে আছে তাঁর।