বহুল আলোচিত চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এম.ভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজন আকাশ মন্ডল ইরফান নামে একজনকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) র্যাব-১১ এর মেজর সাকিব হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “আকাশ মন্ডল ইরফান নামের একজনকে বাগেরহাটের চিতলমারী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি সাত খুনের ঘটনায় জড়িত।”
তিনি আরো বলেন, “র্যাব-১১ কুমিল্লার সিপিসি-২ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে।”
বুধবার সকাল ১১টায় গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-১১ এর মিডিয়া কর্মকর্তা তারেক জানান, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ইরফান পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। জাহাজ থেকে উদ্ধারকৃত রক্তমাখা চাইনিজ কুড়ালের ফিঙ্গার প্রিন্টসহ যাবতীয় তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ইরফানকে কুমিল্লা র্যাব-১১ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। দুপুরে র্যাব কার্যালয়ে ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে সারবহনকারী এম.ভি আল-বাখেরা জাহাজে সাতজন খুনের ঘটনায় অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামি করে হাইমচর থানায় মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান। লাইটার জাহাজ মালিকদের পক্ষে মো. মাহাবুব মোর্শেদ বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মাহবুব মোরশেদের বাড়ি ঢাকার দোহার এলাকায়।
চাঁদপুরের নৌ-পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, “মামলায় খুন ও ডাকাতির অভিযোগ এনে তা চাঁদপুর সদরের হরিণাঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই জাহাজটি থেকে একটি রক্তাক্ত চাইনিজ কুঠার, একটি চাকু, দুটি স্মার্টফোন, দুটি বাটন ফোন, একটি মানিব্যাগ ও নগদ ৮ হাজার টাকা উদ্ধার হয়।”
প্রসঙ্গত, চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর পাড়ে মাঝিরচর এলাকার একটি জাহাজ থেকে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে পাঁচজনের মরদেহ এবং তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে দুই জন মারা যান।
নিহত সাতজন হলেন– জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার আজিজুল ও মাজেদুল, রানা কাজী এবং লস্কর সবুজ শেখ। তাদের বাড়ি নড়াইল ও ফরিদপুর জেলায়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।