অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, “বিগত সময়গুলোতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন কার্যক্রম থেকে শুরু করে সবকিছুতে বঞ্চিত হয়েছে, অবহেলিত হয়েছে। আমি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বলতে চাই, আগামীর বাংলাদেশে এলাকাভিত্তিক কোনো বৈষম্য আর থাকবে না। উত্তরবঙ্গ আর কখনোই উন্নয়ন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হবে না।”
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী পাইলট স্কুল মাঠে শীতবস্ত্র বিতরণ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “ইতোমধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। উত্তরবঙ্গের সুগারমিলগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ অঞ্চলে কৃষিভিত্তিক শিল্পের বিকাশ ঘটানোর জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। উপজেলা ও পৌরসভাভিত্তিক বিভিন্ন বরাদ্দ বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে খেলাধুলার ক্ষেত্রে অঞ্চলভিত্তিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্টেডিয়াম আছে। সেগুলোতে বিপিএল আয়োজন হয়। এবারও বিপিএল হচ্ছে ঢাকার মিরপুরে, চট্টগ্রামে, সিলেটে। আমি চাই, আগামী বছরের মধ্যে উত্তরবঙ্গেও একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম করে সেখানে যেন বিপিএল চালু করা যায়।”
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, “এই সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য এবং এজেন্ডা হচ্ছে—সংস্কার কার্যক্রম। বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে, আর্থিক ব্যবস্থা থেকে সামাজিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। আমরা রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানে সংস্কার করতে চাই।”
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আরও বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে ফ্যাসিবাদী সরকরের পতনের পর যে পরাশক্তিগুলো তা মেনে নিতে পারেনি, তারা আমাদের দেশের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে। নানাভাবে সার্বভৌমত্বকে হুমকির সম্মুখীন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু, যখন আমরা জাতিগত ও রাজনৈতিকভাবে ঐক্য দেখাতে পেরেছি, তখন তাদের স্বর নরম হয়ে গেছে। অর্থাৎ, ঐক্যই আমাদের মুক্তির একমাত্র অবলম্বন। আমাদের ঐব্যবদ্ধ থাকতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছিলাম; তেমনই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে গড়ার যে লড়াই, সে লড়াইয়েও আমাদেরকে থাকতে হবে।”
আটোয়ারী উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাফিউল মাজলুবিন রহমান। উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার দাস, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ জেড এম বজলুর রহমান জাহেদ, উপজেলা জামায়াতের আমির ইউনুস আলী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী প্রমুখ।