তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান বক্তা থাকবেন বহুল আলোচিত মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী—মাসব্যাপী চালানো হয় এমন প্রচার। পোস্টারিং, মাইকিং আর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারে কমতি ছিল না। নির্ধারিত দিনে মাহফিলের আয়োজনও করা হয়। এতে অর্ধলক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়। তবে, মাহফিলে আসেননি কাঙ্ক্ষিত সেই বক্তা। হতাশ হয়ে ফিরতে হয় মুসল্লিদের।
ঘটনাটি গত মঙ্গলবারের (২৫ ডিসেম্বর)। পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের শিংরোড খুনিয়া পাড়া দারুল কোরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এ মাহফিলের আয়োজন করেছিল।
মাহফিলে নির্ধারিত বক্তা না আসা মুসল্লিদের সঙ্গে প্রতারণা, এ অভিযোগ করে আয়োজকদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন ইকবাল বাহার নামে পঞ্চগড়ের এক সংবাদকর্মী।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) পঞ্চগড় জজ কোর্টের আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলনের মাধ্যমে তিনি লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। এতে অভিযুক্ত করা হয় মাদ্রাসার সভাপতি আব্বাস আলী, মুহতামিম মিজানুর রহমান, পরিচালক আলতাফ হোসেন এবং মাহফিলের সভাপতি নুর হাবিবকে।
লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, মাহফিলের আয়োজক কমিটি দেশের জনপ্রিয় ইসলামী আলোচক মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত রাখার জন্য প্রচার করেন। রফিকুল ইসলাম মাদানীর নাম ব্যবহার করে জেলার বিভিন্ন স্থানে ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছ থেকে তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের জন্য টাকা আদায় করা হয়। ২৫ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) শিংরোড খুনিয়া পাড়া দারুল কুরআন হাফেজিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল শুরু হলে পঞ্চগড় জেলাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ধর্মপ্রাণ লোকজন মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীর বক্তব্য শোনার জন্য মাদ্রাসা মাঠে হাজির হন। রাত ১১টা পর্যন্ত অন্য বক্তারা আলোচনা করেন। কিন্তু, তখনও ভাইরাল বক্তা মাওলানা মাদানী উপস্থিত না হলে ক্ষুব্ধ হন শ্রোতারা। একপর্যায়ে আয়োজকরা জানান, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারবেন না। তিনি অনুষ্ঠানে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।
নোটিশে অভিযোগ করা হয়, আয়োজকরা মানুষের মনে ধর্মীয় অনুভূতি জাগ্রত করে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীর নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করেছেন এবং ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত হেনেছেন।
ইকবাল বাহার সাংবাদিকদের বলেছেন, “রফিকুল ইসলাম মাদানী আলোচনা করবেন শুনে শীত উপেক্ষা করে ২৫ কিলোমিটার দূর থেকে গিয়েছিলাম। কিন্তু, গিয়ে প্রতারিত হয়েছি। আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, মাহফিলের আয়োজকরা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে তাদের মাহফিলে দাওয়াতই করেননি। তার নাম ব্যবহার করে যে আয়োজন করা হয়েছে, তা বক্তা জানেনও না। সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়টি সম্পূর্ণ সাজানো। মাহফিলের আয়োজকদের মিথ্যা প্রচারণায় সেখানে গিয়ে আমরা প্রতারিত হয়েছি। ধর্মীয় বিষয়ে এমন প্রতারণা ভবিষ্যতে যেন কেউ না করতে পারে, এজন্য আমি তাদের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি।”
আইনজীবী মেহেদী হাসান মিলন বলেছেন, “মাহফিল কমিটি অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গসহ প্রতারণা করেছে। তারা কেন এটা করল—লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে এর সদুত্তর আগামী তিন দিনের মধ্যে চেয়েছি।”