সারা বাংলা

গজারিয়ায় হাসপাতালের সামনে ভ্যানে সন্তান প্রসব

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ভ্যান গাড়িতে বাচ্চা প্রসব করেছে এক নারী।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ঘটনাটি ঘটে।

প্রসূতি নারীর পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালের সামনে সন্তান প্রসব হলেও ভেতর থেকে কোনো ডাক্তার বা নার্স তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি।

গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুসরাত জাহান বলেন, “আমরা প্রসূতিকে এনআইসিইউ সুবিধা আছে এমন কোনো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেই। পরবর্তীতে শুনতে পাই, তারা একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়েছিলেন, সেখান থেকেও তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ হাসপাতালের সামনে প্রসূতির সন্তান প্রসব করেন। আপাতত মা ও তার সন্তান সুস্থ আছেন। শিশুটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ রাখতে হবে।”

জানা গেছে, সন্তান জন্ম দেওয়া নারীর নাম রুপালি আক্তার (২৫)। তিনি ভবেরচর হাসপাতাল রোড এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিমের স্ত্রী। গতকাল সোমবার রাতে রুপালি আক্তার অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রসব ব্যথা উঠলে আজ সকাল ১০টার দিকে তাকে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসা হয়।

শিশুর ওজন কম এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় ঢাকার কোনো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক। রোগীর স্বজনরা তাকে ঢাকায় না নিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে শারীরিক অবস্থা খারপ হলে তাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য ভ্যানে করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নিয়ে আসা হয়। অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করার সময় রুপালি আক্তার ভ্যানের ওপরে ছেলে সন্তান জন্ম দেন।

রুপালি আক্তারের বড় ভাই সজিব বলেন, “হাসপাতালের সামনে আমার বোন সন্তান জন্ম দিয়েছেন। তবে হাসপাতালের ভেতর থেকে কোনো ডাক্তার-নার্স এগিয়ে আসেনি। উনারা আমাদের রোগীকে ঢাকা নিয়ে যেতে বলেছিলেন, কিন্তু সেই সময়টুকু আমরা পাইনি।”

গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নুসরাত জাহান বলেন, “আজ সকালে প্রসূতিকে আমাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। উনার সর্বশেষ আলট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ছিলো ১৩৫০ গ্রামের মতো। এত কম ওজনের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে জন্মের পর এনআইসিইউ সাপোর্ট দেওয়া লাগতে পারে। এ কারণে আমরা প্রসূতিকে এনআইসিইউ সুবিধা আছে এমন কোনো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেই।” 

তিনি আরো বলেন, “পরবর্তীতে শুনতে পাই, তারা (নবজাতকের পরিবার) একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেও তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সর্বশেষ হাসপাতালের সামনে প্রসূতি সন্তান প্রসব করেন। আপাতত মা ও বাচ্চা সুস্থ আছেন। শিশুটিকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ রাখতে হবে।”