স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য এম এম রেজা বলেছেন, “স্বাস্থ্য খাতকে জনমুখী ও সর্বজনগ্রাহ্য করতে দুইটি বিষয়ে ভাবতে হবে। প্রথমটি হল- সেবার পরিমাণ বাড়ানো, যাতে সবাই সেবাটি পায়, আরেকটি হল- ব্যক্তির আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তাকে হেলথ কাভারেজের আওতায় নিয়ে আসা। এটা করতে না পারলে কিছু লোক হয়তো উন্নত চিকিৎসাসেবা পাবেন, তবে বড় সংখ্যক মানুষ এ সেবা পাবেন না।”
বুধবার (৬ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজের সম্মেলন কক্ষে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এম এম রেজা বলেন, বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে সরকারি অংশের পরিসর যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি এই খাতে বেসরকারি পর্যায়েরও অনেক বিকাশ হয়েছে। বেসরকারি খাতে স্বাস্থ্য শিক্ষা যেমন- মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের ল্যাবরেটরিজ ফ্যাসিলিটিজও বেশি।”
তিনি আরো বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতির উন্নতি করতে সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্রেও সেবাদান পরিস্থিতির উন্নয়নে বিশেষ করে সেবার মান ও খরচ বিষয়ে ভাবতে হবে। সরকারি স্বাস্থ্যখাতের দক্ষতা বাড়ানো ও দুর্নীতি দূর করতে করণীয় বিষয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।”
খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, ড. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশীদ, খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. দীন উল ইসলামসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশের প্রতিনিধি, বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, পেশাজীবী চিকিৎসক সংগঠনের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধি, এনজিও, মেডিকেল ও নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় তারা তাদের মতামত তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের বক্তৃতায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবা প্রদানে সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রগুলো ও চিকিৎসা উপকরণের স্বল্পতা দূর করার বিষয়টি উঠে আসে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যখাতের মাঠপর্যায় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দুর্নীতি বন্ধে করণীয়, মেডিকেল ও নার্সিং কলেজসহ স্বাস্থ্যশিক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত মানসম্মত স্তরে আনা, চিকিৎসকদের সঠিকসময়ে পদোন্নতি ও স্বাস্থ্যখাতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের সুযোগ বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে জানানো হয়।
সরকারি হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগের মতো প্যাথলজি ও রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা ২৪ ঘণ্টা চালু রাখা এবং হাসপাতালগুলো দালালমুক্ত করাসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় তুলে ধরেন অংশগ্রহণকারীরা।