পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী হারমোনি ফেস্টিভ্যাল। ফেস্টিভ্যালে জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের উৎপাদিত পণ্য, খাবার, জীবনাচার, পোশাক ইত্যাদি প্রদর্শন ও তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, নাচ-গান, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের বিষয়াদি তুলে ধরা হচ্ছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আয়োজনটি শুরু হয়েছে শ্রীমঙ্গল বিটিআরআই সংলগ্ন কাকিয়াছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এ জেলায় বসবাসরত ২৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে এই হারমোনি ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করে। এতে খাসিয়া, গারো, মণিপুরী, ত্রিপুরা, সবর, খাড়িয়া, রিকিয়াসন, বারাইক, কন্দ, রাজবল্লভ, ভূঁইয়া, সাঁওতাল, ওরাও, গড়াইত, মুন্ডা, কুর্মী, ভুমিজ, বুনারাজি, লোহার, গঞ্জু, কড়া জনগোষ্ঠী অংশ নিচ্ছেন।
ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবেশনা
৪৪টি স্টলের মাধ্যমে তাদের উৎপাদিত পণ্য, খাবার, জীবনাচার, পোশাক ইত্যাদি প্রদর্শন ও বিক্রয় ছাড়াও তাদের সংস্কৃতি, নাচ-গান, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের বিষয়াদি মঞ্চে পরিবেশন করছেন।
প্রথমবারের মতো এমন আয়োজনে উচ্ছ্বসিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন। অন্যদিকে মেলায় অংশগ্রহণকারি নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী খাবার, তাদের সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে পারছেন পর্যটকরা।
পর্যটক সংশ্লিষ্টরা জানান, এই অঞ্চলের পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড অঞ্চলভিত্তিক হারমোনি ফেস্টিভ্যালের উদ্যোগ নেওয়ায় বৈচিত্র্যময় মৌলভীবাজারে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়বে।
ট্যুরিষ্ট সংশ্লিষ্ট ঢাকার আফতাব আহমদ বলেন, “পর্যটক আকৃষ্ট করতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
মণিপুরী তাঁত শিল্পের মালিক জুহিতা সিনহা বলেন, “হাতের তৈরি কাপড়ের প্রতি পর্যটকদের আর্কষণ বৃদ্ধির জন্য ট্যুরিজম বোর্ডের হারমোনি ফেস্টিভ্যাল প্রশংসনীয় উদ্যোগ। পর্যটন শিল্পকে বৈচিত্র্যময় না করলে এই শিল্প বিকশিত হবে না।”
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, “ট্যুরিজম বোর্ড পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে অঞ্চলভিত্তিক হারমোনি ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে।”
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, “সম্ভাবনাময় পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি। এখানে পর্যটনশিল্প বিকশিত হলে বৃদ্ধি পাবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ।”
নৃ-জাতি গোষ্ঠীর বর্ণিল জীবন ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনে এই হারমোনি ফেস্টিভ্যাল ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে।